রবিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৫, ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
সর্বশেষ বিশেষ সংবাদ জাতীয় সারাদেশ আন্তর্জাতিক খেলা বিনোদন বাণিজ্য লাইফস্টাইল আইন-আদালত মতামত অন্যান্য
/ আন্তর্জাতিক

সাদে তেইমান আটককেন্দ্র থেকে ফিরল ১৩৫ বিকৃত মরদেহ


প্রকাশ :

গাজা — ইসরায়েলের সাদে তেইমান আটককেন্দ্র থেকে গাজার কাছে কমপক্ষে ১৩৫টি বিকৃত বা অস্বাভাবিক অবস্থায় মরদেহ ফেরত এসেছে, জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক ডা. মুনির আল–বুর্শ ও খান ইউনিসের নাসের হাসপাতালের একজন মুখপাত্র ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

প্রতিটি মরদেহের সঙ্গে থাকা ব্যাগের ট্যাগে হিব্রু ভাষায় স্পষ্টভাবে লেখা ছিল যে এগুলো সাদে তেইমান কেন্দ্র থেকে পাঠানো হয়েছে। কিছু ট্যাগে ডিএনএ পরীক্ষা সম্পন্ন হওয়ার কথাও উল্লেখ ছিল। পরিবারের সদস্যরা মরদেহ দেখে বলেন, এগুলো সাধারণ লাশ নয় — অনেক ক্ষেত্রে দেহে নির্যাতনের আভাস মেলে বা পরিচিতি তিলিকায় অস্বাভাবিকতা দেখা যায়, যা হতাশা ও আতঙ্ক বাড়িয়েছে।

সাদে তেইমান কেন্দ্রটি নেগেভ মরুভূমিতে অবস্থিত। পূর্বের ফাঁস হওয়া ছবি ও প্রত্যক্ষদর্শীর বর্ণনায় কেন্দ্রটির বিরুদ্ধে বন্দিদের প্রতি নিষ্ঠুর আচরণ, অবমাননা ও বেআইনি মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। গত বছরও সেখানে বন্দিদের মৃত্যুর ঘটনায় তদন্ত ঘোষণা করেছিল ইসরায়েলি সেনাবাহিনী, কিন্তু এখনও পর্যন্ত দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি দেখা যায়নি। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো দীর্ঘদিন ধরেই ওই কেন্দ্রটি নিয়ে উদ্বিগ্ন বলে প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে।

গাজায় মার্কিন-মধ্যস্থ সাময়িক যুদ্ধবিরতির অংশ হিসেবে হামাস কিছু নিহত ইসরায়েলি জিম্মির দেহ ফেরত দিয়েছে; একই সময়ে ইসরায়েলও ৭ অক্টোবর ২০২৩-এ শুরু হওয়া সংঘাতের পর ফেরত দিয়েছে প্রায় ১৫০ জন ফিলিস্তিনির মরদেহ, সংবাদে বলা হয়েছে। এসব মরাদেহ ফেরত আসার পর গাজার স্থানীয় জনগণ ক্ষোভ, শোক এবং ভয়ের মিশ্র অনুভূতিতে রয়েছে। স্বজনহারা পরিবাররা বলছেন, এসব কেবল ব্যক্তিগত ক্ষতি নয় — এগুলো এক জাতিকে দীর্ঘমেয়াদি নির্যাতনের এবং নীরব করে রাখার প্রমাণ।

এক্ষেত্রে আবেদন উঠছে প্রয়োজনীয় স্বতন্ত্র ও স্বচ্ছ তদন্তের, যাতে প্রত্যেকটি মৃত্যুর সত্যি কারণ উদঘাটিত হয় এবং দায়ীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া যায়। গাজা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও স্থানীয় হাসপাতালে কাজ করা চিকিৎসকরা মরদেহগুলো সনাক্তকরণ ও পরিবারগুলোর কাছে হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে বলেও জানিয়েছেন।

যদিও এ ঘটনায় এখনও আন্তর্জাতিক বিচারসংস্থা বা তৃতীয় পক্ষ থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক তদন্ত শুরু হয়েছে-না এমন কোনো ঘোষণা দ্রুতভাবে পাওয়া যায়নি। সঙ্গে থাকা পরিবারগুলো ও মানবাধিকার কর্মীরা যতক্ষণ সঠিক তদন্ত ও জবাবদিহিতার দাবি তুলি, ততক্ষণ গাজার ক্ষত এখনো নতুন করে চিহ্নিত হচ্ছে — এবং এ খবর বিশ্বব্যাপী উদ্বেগ বাড়াচ্ছে।