প্রয়াত হলেন বিশ্বের প্রভাবশালী পদার্থবিজ্ঞানীদের একজন ও নোবেলজয়ী চীনা বিজ্ঞানী চেন নিং ইয়াং। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ১০৩ বছর। খবর দ্য গার্ডিয়ানের।
শনিবার (১৮ অক্টোবর) চীনের রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারমাধ্যম সিসিটিভি এক প্রতিবেদনে জানায়, বার্ধক্যজনিত জটিলতায় বেইজিংয়ের ছিংহুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন অধ্যাপক ইয়াং।
চেন নিং ইয়াং ও তার সহকর্মী লি সাং-দাও ১৯৫৭ সালে পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার অর্জন করেন। তারা যৌথভাবে ‘পারিটি ল’ বা সমতার নিয়ম নিয়ে এমন এক গবেষণা পরিচালনা করেন, যা মৌলিক কণার আচরণ ও গঠনের ধারণায় নতুন দিগন্ত উন্মোচন করে।
১৯২২ সালে চীনের আনহুই প্রদেশে জন্মগ্রহণ করেন ইয়াং। পাঁচ ভাইবোনের মধ্যে তিনি ছিলেন বড়। তার বাবা ছিলেন ছিংহুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিতের অধ্যাপক, ফলে শৈশব থেকেই বিশ্ববিদ্যালয় পরিবেশে বেড়ে ওঠেন। ১৯৪২ সালে ন্যাশনাল সাউথওয়েস্ট অ্যাসোসিয়েটেড ইউনিভার্সিটি, কুনমিং থেকে স্নাতক সম্পন্ন করে পরে ছিংহুয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন।
কৈশোরেই নোবেল জয়ের স্বপ্ন দেখেছিলেন ইয়াং, আর মাত্র ৩৫ বছর বয়সে সেই স্বপ্ন পূরণ করেন। নোবেল কমিটি তাদের গবেষণাকে “মৌলিক কণার গঠন ও প্রকৃতি বিষয়ে অসাধারণ অন্তর্দৃষ্টিসম্পন্ন অনুসন্ধান” হিসেবে স্বীকৃতি দেয়।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষে ছিংহুয়ার বৃত্তি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে যান তিনি। শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ে ইতালীয় পদার্থবিজ্ঞানী এনরিকো ফেরমির তত্ত্বাবধানে গবেষণা করেন ইয়াং। দীর্ঘ কর্মজীবনে পদার্থবিজ্ঞানের প্রায় সব শাখায় কাজ করলেও তার বিশেষ আগ্রহ ছিল স্ট্যাটিস্টিক্যাল মেকানিকস ও সিমেট্রি প্রিন্সিপলস বিষয়ে।
নোবেলজয়ের পর ১৯৫৭ সালে তিনি আলবার্ট আইনস্টাইন স্মারক পুরস্কার ও পরের বছর প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানসূচক ডক্টরেট লাভ করেন।
ইয়াংয়ের মৃত্যুতে বিজ্ঞানজগতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।