ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিলো বিশ্বের প্রভাবশালী তিন দেশ যুক্তরাজ্য, কানাডা এবং অস্ট্রেলিয়া। রবিবার (২১ সেপ্টেম্বর) এক যৌথ ঘোষণার মাধ্যমে এই সিদ্ধান্ত জানানো হয়। মধ্যপ্রাচ্যে চলমান রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ এবং গাজায় ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়ের প্রেক্ষাপটে এই স্বীকৃতি আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে নতুন মাত্রা যোগ করল।
ঘোষণার সময় ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার বলেন, “আমরা শান্তির সম্ভাবনা এবং দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধানকে জীবিত রাখার চেষ্টা করছি। এর অর্থ হলো, একটি নিরাপদ ইসরায়েল এবং একটি কার্যকর ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র। বর্তমানে আমরা কোনোটিই পাচ্ছি না। অথচ ইসরায়েল ও ফিলিস্তিনের সাধারণ মানুষ শান্তিতে বসবাসের যোগ্য।”
তিনি আরও স্পষ্ট করে জানান, এই সিদ্ধান্তকে হামাসের প্রতি কোনো পুরস্কার হিসেবে দেখা যাবে না। বরং আগামী সপ্তাহগুলোতে হামাস নেতাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের পদক্ষেপ নেওয়া হবে। স্টারমারের ভাষায়, “হামাসের ভবিষ্যৎ সরকার বা নিরাপত্তা কাঠামোতে নেই।”
গাজার বর্তমান পরিস্থিতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “মানবসৃষ্ট এই সংকট গভীরতর হয়েছে। ইসরায়েলের ক্রমবর্ধমান বোমাবর্ষণ, খাদ্য সংকট ও অবকাঠামো ধ্বংস একেবারেই অসহনীয় পর্যায়ে পৌঁছেছে।”
কূটনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, পশ্চিমা শক্তির এই ঐতিহাসিক স্বীকৃতি ফিলিস্তিন প্রশ্নে বৈশ্বিক সমীকরণ পাল্টে দিতে পারে। এতদিন ইউরোপ-আমেরিকার বড় অংশ ইসরায়েলের প্রতি নীরব সমর্থন দেখালেও এখন পরিবর্তনের সুর ধরা পড়ছে। কানাডা ও অস্ট্রেলিয়ার এই অবস্থান যুক্তরাষ্ট্রের উপরও চাপ তৈরি করবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ফিলিস্তিনি নেতৃত্ব এ সিদ্ধান্তকে “বিচারের পথে বড় অগ্রগতি” হিসেবে স্বাগত জানিয়েছে। তবে ইসরায়েলি সরকার ইতিমধ্যেই এই পদক্ষেপের তীব্র বিরোধিতা করেছে।
আন্তর্জাতিক মহল বলছে, এই স্বীকৃতি হয়তো সঙ্গে সঙ্গে যুদ্ধ থামাবে না, কিন্তু দীর্ঘদিনের অচলাবস্থার মাঝে নতুন করে শান্তি প্রক্রিয়া শুরুর সুযোগ তৈরি করতে পারে।