মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জনপ্রিয় টকশো সঞ্চালক ও অভিনেত্রী রোজি ও’ডোনেলের নাগরিকত্ব বাতিল করার হুমকি দিয়েছেন। টেক্সাসে ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতি এবং প্রশাসনের দুর্বলতা নিয়ে সমালোচনা করায় এই মন্তব্য করেন ট্রাম্প।
নিজের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে ট্রাম্প লেখেন, ‘রোজি ও’ডোনেল আমাদের মহান দেশের স্বার্থের উপযোগী নন। এ বিবেচনায় তার নাগরিকত্ব বাতিলের বিষয়টি আমি গুরুত্ব দিয়ে ভাবছি।’
ট্রাম্প আরও বলেন, ‘সে মানবজাতির জন্য হুমকি। যদি আয়ারল্যান্ড তাকে রাখতে চায়, সেখানে থাকুক। ঈশ্বর আমেরিকাকে রক্ষা করুন!’
তবে মার্কিন আইনে যুক্তরাষ্ট্রে জন্মগ্রহণকারী কারও নাগরিকত্ব প্রেসিডেন্টের একক সিদ্ধান্তে বাতিল করা সম্ভব নয়। ও’ডোনেল নিউ ইয়র্কে জন্মগ্রহণ করেছেন।
ট্রাম্প ও ও’ডোনেলের মধ্যে সামাজিক মাধ্যমে বহু বছর ধরে বিবাদ চলে আসছে। ২০১৪ সালে ওজন কমানো নিয়ে মন্তব্য করে ট্রাম্প ও’ডোনেলকে অপমান করেছিলেন। এরপর প্রায় নিয়মিতভাবেই তাকে নিয়ে কটূক্তি করে আসছেন তিনি।
সম্প্রতি ও’ডোনেল একটি টিকটক ভিডিওতে টেক্সাসের ৪ জুলাইয়ের বন্যায় নিহত ১১৯ জনের ঘটনায় ট্রাম্প প্রশাসনকে দায়ী করেন। তিনি বলেন, ‘যখন রাষ্ট্রপতি সরকারিভাবে আগাম সতর্কবার্তা ও আবহাওয়ার পূর্বাভাস ব্যবস্থা ধ্বংস করে দেন, তখনই এমন ঘটনা ঘটতে থাকে।’ ওই ভিডিও প্রকাশের পরই ট্রাম্পের এই হুমকি আসে।
ট্রাম্প শুক্রবার টেক্সাসে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শনে গিয়ে বলেন, তার প্রশাসন ‘সর্বোচ্চ দক্ষতায় কাজ করেছে’।
ও’ডোনেল পাল্টা জবাবে ইনস্টাগ্রামে লেখেন, ‘এই দেশের প্রেসিডেন্ট সবসময় ঘৃণা করেছে আমাকে, কারণ আমি তাকে সত্যিকার অর্থে চিনতে পেরেছি—একজন অপরাধী, প্রতারক, যৌন নিপীড়ক এবং দেশবিরোধী লোক।’
ও’ডোনেলের মতো সমালোচকদের বিরুদ্ধে সাম্প্রতিক সময়ে আরও কঠোর হয়ে উঠেছেন ট্রাম্প। চলতি মাসের শুরুতে তিনি প্রাক্তন উপদেষ্টা ও বর্তমান সমালোচক ইলন মাস্ককে দেশ থেকে বহিষ্কারের কথা বলেন। মাস্ক মার্কিন নাগরিক হলেও প্রকৃতপক্ষে প্রাকৃতিকভাবে যুক্তরাষ্ট্রে জন্মাননি।
এছাড়া, গত মাসে হোয়াইট হাউজ থেকে জানানো হয়—নিউ ইয়র্ক সিটির মেয়র পদপ্রার্থী জোহরান মামদানির বিরুদ্ধে ‘সন্ত্রাসবাদ সমর্থনের’ অভিযোগ তদন্ত করে তার নাগরিকত্ব বাতিলের বিষয়টি বিবেচনা করা উচিত।
চলতি বছরের শুরুতে ট্রাম্পের দ্বিতীয় মেয়াদের শপথ নেওয়ার পরই ও’ডোনেল তার ১২ বছরের সন্তানকে নিয়ে আয়ারল্যান্ডে চলে যান। মার্চে এক ভিডিওতে তিনি বলেন, ‘যেদিন আমেরিকায় সব নাগরিকের জন্য সমান অধিকার নিশ্চিত হবে, সেদিন আমি দেশে ফিরব।’