বৃহস্পতিবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৫, ১০ বৈশাখ ১৪৩২
সর্বশেষ বিশেষ সংবাদ জাতীয় সারাদেশ আন্তর্জাতিক খেলা বিনোদন বাণিজ্য লাইফস্টাইল আইন-আদালত মতামত অন্যান্য
/ সারাদেশ

রংপুরে নগরীর বিভিন্ন অভিজাত শপিংমল থেকে ফুটপাতে চলছে ঈদের কেনাকাটা


প্রকাশ :

রংপুর অঞ্চলে ঈদের সময় যতই ঘনিয়ে আসছে ততই বাড়ছে কেনাকাটার ধুম।সারাদেশের মতো জমেছে ঈদ কেনাকাটা। এবার শপিং মলের চেয়ে ফুটপাতের কমদামী কাপড়ের বাজার বেশ জমে উঠেছে।নগরীর বিভিন্ন অভিজাত শপিংমল থেকে ফুটপাতে চলছে ঈদের কেনাকাটা। নানা রঙের আলোকসজ্জায় সজ্জিত করা হয়েছে অভিজাত শপিংমল, মার্কেট ও ফুটপাতের দোকানগুলো।অস্থায়ী ভাবে গড়ে ওঠা ভাসমান মৌসুমী ব্যবসায়ীরা টেবিল বসিয়ে বিভিন্ন ধরনের পোশাকের পসরা সাজিয়েছেন। কেউ ছুটছেন শপিংমলে কেউ আবার ফুটপাতের দোকানে।

নগরীর ঘুরে দেখা গেছে, জাহাজ কোম্পানি শপিং কমপ্লেক্স, জেলা পরিষদ মার্কেট, সুপার মার্কেট, আরএমসি মার্কেট, জামাল মার্কেট, ছালেক মার্কেট, রজনীগন্ধ্যা মার্কেট ছাড়াও ইয়োলো, আম্ব্রেলা, ইনফিনিটি, আড়ং, দর্জিবাড়ি, বন্ড, ডায়মন্ড, বেঙ্গলবস, অঞ্জনসহ শতাধিক অত্যাধুনিক কাপড়ের শোরুম গুলো আলোকসজ্জায় সজ্জিত করা হয়েছে। ক্রেতা আকর্ষণে কেনাকাটা করলেই নিশ্চিত উপহার রাখা হয়েছে মার্কেটের পক্ষ থেকে।সকাল ১০টা থেকে রাত সাড়ে ১২টা পর্যন্ত অনেক লোকের সমাগম হচ্ছে এসব মার্কেট ও সড়কের ফুটপাত গুলোতে।হালের ফ্যাশনের সঙ্গে তাল মিলিয়ে প্রতিটি শোরুমে পোশাকের পসরা সাজানো হয়েছে। ভিন্ন ডিজাইনের নতুন কালেকশন এসেছে, বিশেষ করে পাঞ্জাবি, লন-সালওয়ার-কামিজ ও কুর্তিতে দেখা গেছে ভিন্নতা। নামিদামি শপিংমলের শোরুমে শোভা পাচ্ছে হাজার থেকে লাখ টাকা মূল্যের পোশাক।

বাজারে দেখা গেছে,এবার জামদানি ৩ হাজার থেকে ৩০ হাজার টাকা, মেয়েদের পাগলু, বিপাশা বসু, জান্নাত-টু, আশিকী-২, জিপসি ৩৫০ থেকে ২৮ হাজার ৫০০ টাকা, ছেলেদের কার্গো জিন্স, থাই, ডিসকার্ড-২, সিম ফিট, ফরমাল টি শার্ট ৭৫০ থেকে ৩ হাজার ৫শ টাকা, ছোটদের লেহেঙ্গা, মাসাক্কালী, সিঙ্গেল টপ, টপসেট, গেঞ্জিসেট ১ হাজার ২‘শ থেকে ৬ হাজার টাকা, পাঞ্জাবির মধ্যে বড়দের ছোটদের ধুতি কাতান ৩৫০ টাকা থেকে ৫ হাজার এবং আকর্ষণীয় শেরওয়ানি ৫ হাজার থেকে ৩০ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে।ছেলেদের বাহুবলী, বজরঙ্গি ভাইজান ও রইস পাঞ্জাবি। সাধ্যমতো কেনাকাটা করছেন ক্রেতারা।

নগরীর গ্রান্ড হোটেল মোড় থেকে টাউন হল চত্বর পর্যন্ত সড়কের দুই ধারে কাপড়, স্যান্ডেল, জুতা, প্যান্ট-শার্ট, থ্রি পিস, শাড়ি, লুঙ্গি, পাঞ্জাবি, বাচ্চাদের কাপড়, টুপি, আতরসহ বিভিন্ন ধরনের পোশাকের পসরা সাজিয়ে বসেছেন মৌসুমি ব্যবসায়ীরা।সীমাবদ্ধ সড়কের মধ্যে নয়  স্টেশন রোড, মেডিকেল মোড়, হাঁড়িপট্টি রোড, সিও বাজারসহ বিভিন্ন এলাকার ফুটপাত কেন্দ্রিক দোকানগুলোতে জমে উঠেছে ঈদ কেনাকাটা।এই দোকানে অধিকাংশ ক্রেতা নিম্ন ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষ।

নগরীর ডিসির মোড়ে গ্রীন ফ্যাশন ও স্পোর্টস শো রুমের ব্যবস্থাপক আবু তাহের জানান,নতুন হিসেবে বিক্রি খারাপ হচ্ছে না। বিশেষ করে পণ্য কেনাকাটায় ১০ থেকে ৩০ শতাংশ পর্যন্ত ডিসকাউন্ট থাকায় ক্রেতারা বেশি বেশি ভিজিট করছেন।ব্যান্ডের কাপড় বিক্রিতে ঝামেলা নেই। একদাম হওয়ায় পছন্দ হলেই বিক্রি হচ্ছে। শুধু ক্রেতাকে পণ্যটি দেখিয়ে আকৃষ্ট করতে পারলেই হয়।

নগরীর প্রধান সড়কের দুই পাশের ফুটপাতের দোকান গুলোতে উপচে পড়া ভিড় দেখা গেছে।ফুটপাতের দোকানগুলোই স্বল্প আয়ের মানুষের যেন শেষ ভরসা। স্বল্পমূল্যের মধ্যে তারা পরিবার পরিজনের কেনাকাটা সম্পন্ন করছেন।


 ফুটপাতের দোকানি গাটু চন্দ্র বলেন, রোজার শুরু থেকেই বিক্রি ভালো হচ্ছে।অভিজাত শপিংমল ও মার্কেটের তুলনায় আমাদের ব্যবসা পরিচালনা ব্যয় অনেক কম। এ কারণে অনেক ভালো মানের পণ্য সাশ্রয়ী মূল্যে আমরা বিক্রি করতে পারি। ক্রেতারা সন্তুষ্ট হয়  আমাদের বিক্রি ভালো হয়।

আড়ংয়ে পাঞ্জাবি কিনতে আসা সাব্বির হোসেন জানান, প্রতি বছরই আড়ং থেকেই পাঞ্জাবি কেনা হয়। একটা পাঞ্জাবি কেনা হয়েছে। আর একটা পাঞ্জাবি কেনার জন্য দেখছি।আড়ংয়ের পাঞ্জাবি গুলো ভালো ডিজাইনের হয়। আরাম দায়ক তবে দাম তুলনা মূলক বেশি।

দিনমুজুর রেজাউল করিম জানান, ইচ্ছে করলেও মার্কেটে গিয়ে কেনাকাটা করতে পারি না। তাই সাধ্যমতো ফুটপাতের দোকানে কম দামে কেনাকানাটা করছি।   এখনও বাড়ির সবার কেনাকাটা হয়নি।ফুটপাতের দোকানে দুই‘শ থেকে পাঁচ শ টাকার মধ্যে যেকোনো জিনিস কেনা হয় যা শপিংমল গুলোতে সাধারণত দেড় থেকে দুই হাজার টাকায় পাওয়া যায় না।

রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মোঃ মজিদ আলী জানান,ঈদ কেনাকাটা স্বাচ্ছন্দে ও নির্বিঘ্ন করতে প্রতিটি মার্কেটের সামনে পুলিশ রয়েছে। সেই সঙ্গে সাদা পোশাকে পুলিশের নজরদারি রয়েছে।