প্রেমিকাকে বিয়ের জন্য টাকা এবং বাবার ঋনের দায় মুক্তির টাকা জোগাড় করতে পিতা - পুত্র মিলে মাদ্রাসা ছাত্র শাকিলকে (৯) অপহরণ করে। পরে মুক্তিপণের টাকা না পেয়ে শ্বাসরোধে হত্যা নিশ্চিত করে বাড়ির পাশে টয়লেটের সেপটিক ট্যাংকে মরদেহ ফেলে মাটি চাপা দেয়। বুধবার বিকালে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানান, লালমনিরহাট পুলিশ সুপার তরিকুল ইসলাম।
এ ঘটনায় অভিযুক্ত ছেলে সোহান ইসলাম (২১), পিতা শহিদুল ইসলাম (৪৫) ও মাতা শাহানা বেগমকে (৪৫) গ্রেফতার করে পুলিশ। তাদের দেওয়া তথ্য মতে গত মঙ্গলবার বিকালে সদর উপজেলার গোকুন্ডা ইউনিয়নের ফকিরটারী রতিপুর এলাকার ওই সেপটিক ট্যাংক থেকে মাদ্রাসা ছাত্রের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, অভিযুক্ত সোহান নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা এলাকার এক মেয়ে সঙ্গে গত তিন বছর ধরে মোবাইল ফোনে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে। ঈদের পর বিয়ে করার কথা ছিলো তাদের। বিয়ে করার জন্য টাকার প্রয়োজন, এছাড়া বাবার ঋনের টাকা পরিশোধের জন্য টাকা জোগাড় করতে শাকিলকে অপহরণের সিদ্ধান্ত নেয়। পরে সোহান শাকিলকে মাটি অপসরনের কাজের কথা বলে কৌশলে নিজ বাসায় ডেকে নিয়ে আসে। পরে বাবা শহিদুলের শয়ন ঘরে শাকিলকে নিয়ে লুকিয়ে রেখে শাকিলের মা জয়নব বেগমকে ফোন করে তিন লাখ টাকা মুক্তিপন দাবী করে। শাকিলের মা টাকা না দিয়ে বিষয়টি পুলিশকে জানায়। এদিকে মুক্তিপণের টাকা না পেয়ে শাকিলকে রশি দিয়ে হাত-পা বেঁধে বুকের উপরে বসে গলা চেপে ধরে। এ সময় সোহানের বাবা শহিদুল শাকিলের পা চেপে ধরে। পরে মৃত্যু নিশ্চিত হয়ে বাবা ছেলে মিলে মরদেহ বাড়ি সংলগ্ন টয়লেটের সেপটি ট্যাংকের প্রায় ৫-৬ ফুট নিচে মাটি চাপা দেয়।
এ ঘটনার পরে পুলিশ মোবাইল নম্বরের সুত্র ধরে বাবা, ছেলে ও মাকে আটক করে থানা হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে। এক পর্যায়ে তারা স্বীকার করলে তাদের দেওয়া তথ্য মতে সেপটি ট্যাংক থেকে মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
লালমনিরহাট সদর থানার ওসি মোহাম্মদ নূর নবী জানান, এ ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। শাকিলের মৃতদেহে পেঁচানো আসামী শহিদুল এর ব্যবহৃত লুঙ্গী উদ্ধার করা হয়েছে। আসামীদের বুধবার বিকালে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।