সোমবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৫, ৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
সর্বশেষ বিশেষ সংবাদ জাতীয় সারাদেশ আন্তর্জাতিক খেলা বিনোদন বাণিজ্য লাইফস্টাইল আইন-আদালত মতামত অন্যান্য
/ সারাদেশ

মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবন হস্তান্তরে ডিসি ও ইউএনওদের সংশোধনী পরিপত্র প্রদান


প্রকাশ :

বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কর্তৃক সকল জেলা ও উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবন হস্তান্তরের বিষয়ে জেলা প্রশাসক (ডিসি) ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের (ইউএনও) কাছে সংশোধনী পরিপত্র প্রদান করা হয়েছে।

মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় গত ২২ অক্টোবর পূর্বের অফিস আদেশ বাতিল করে ১.২ (ক) ধারা অনুসরণপূর্বক বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা সংসদের গঠিত কমিটি (আহ্বায়ক মহানগর/জেলা অ্যাডহক কমিটি/কমান্ডার, নির্বাচিত মহানগর/জেলা মুক্তিযোদ্ধা ইউনিট কমান্ড)-এর কাছে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অর্পিত দায়িত্ব হস্তান্তরের নির্দেশ দিয়েছে।স্বারক নং: ৪৮.০০.০০০০.০০৫.১৪.০০১.২৩।

এর আগে, গত ৪ সেপ্টেম্বর মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবন ব্যবহার সংক্রান্ত সংশোধনী পরিপত্রে জেলা পর্যায়ে ভবন রক্ষণাবেক্ষণ ও পরিচালনার জন্য একটি কমিটি গঠন করা হয়েছিল। এতে জেলা প্রশাসককে আহ্বায়ক, জেলা ইউনিট কমান্ডারকে যুগ্ম আহ্বায়ক, গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রকৌশলী ও সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপপরিচালককে যথাক্রমে সদস্য ও সদস্য-সচিব করা হয়।

তবে ওই পরিপত্র জারির পর বিভিন্ন জেলার জেলা প্রশাসকগণ রক্ষণাবেক্ষণ ও পরিচালনা কমিটির মিটিংয়ের অজুহাতে মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবন জেলা আহ্বায়কের নিকট হস্তান্তরে অযথা জটিলতা সৃষ্টি ও অনীহা প্রকাশ করেন। এতে জেলা ইউনিট কমান্ডের কার্যক্রম ব্যাহত হয়। একইসঙ্গে শুরু হয় দলীয়করণ ও ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাদের অপতৎপরতা।

এর প্রেক্ষিতে মন্ত্রণালয় নতুন সংশোধনী পরিপত্রের মাধ্যমে পূর্বের আদেশ বাতিল করে।

উল্লেখযোগ্য যে, দেশের অনেক জেলা ও উপজেলার মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবন দীর্ঘদিন ধরে বেদখলে রয়েছে। এসব ভবন রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব জেলা প্রশাসক ও ইউএনওদের ওপর অর্পণ করা হয়েছিল। মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবনের তালা ও চাবি জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের হেফাজতে রাখার বিধানও ছিল।

কিন্তু গত ৫ আগস্টের পর কিছু অসাধু ব্যক্তি বিভিন্ন মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবনে লুটপাট, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটায়। জেলা প্রশাসক ও ইউএনওরা এসব ঘটনায় কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করেননি বলে অভিযোগ ওঠে। পরবর্তীতে দলীয় প্রভাবশালী ও ভুয়া মুক্তিযোদ্ধারা এসব ভবন দখল করে নেয়, শুরু হয় অবৈধ রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ। ফলে জেলা ও উপজেলা প্রশাসন কার্যত অসহায় হয়ে পড়ে এবং নবগঠিত আহ্বায়ক কমিটির কাছে ভবন হস্তান্তরে গড়িমসি শুরু হয়।

মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের নতুন নির্দেশনায় বলা হয়েছে, পরিপত্র পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই প্রশাসনের হস্তগত মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবনের চাবি নবগঠিত জেলা ও উপজেলা আহ্বায়ক কমিটির নিকট হস্তান্তর করতে হবে।

প্রশাসনের দায়িত্ব ছিল ভবন ও তালাচাবি যথাযথভাবে হস্তান্তর করা। কিন্তু অনেক ডিসি ও ইউএনও দায়িত্ব পালনে অবহেলা এবং সরকারি নির্দেশনা উপেক্ষা করেছেন। সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী (শৃঙ্খলা) বিধিমালা অনুযায়ী সরকারি নির্দেশনা অমান্য করা শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

উল্লেখ্য, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবন উপজেলা কমান্ডের আহ্বায়কের নিকট হস্তান্তরের জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসারদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।