"পরিবারকে ফাঁকি দিয়েছি, সন্তানদেরকে ফাঁকি দিয়েছি, ফাঁকি দেইনি দলকে" বলতে বলতে অশ্রুসিক্ত হয়ে পড়লেন লালমনিরহাট-২ (কালীগঞ্জ-আদিতমারী) আসনের বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী জাহাঙ্গীর আলম।
বুধবার,১৫ অক্টোবর বিকালে কালীগঞ্জ উপজেলার তুষভান্ডার রমনীমোহন মেমোরিয়াল সরকারী হাই স্কুল মাঠে এক বিশাল জন সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
আগামী ফেব্রুয়ারির জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ধানের শীষ প্রতীকের বিজয় নিশ্চিত করে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আহ্বান জানান কালীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক জাহাঙ্গীর আলম।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ঘোষিত রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের ৩১ দফা বাস্তবায়ন ও জনসম্পৃক্তি গড়ে তোলার লক্ষ্যে আয়োজিত বিশাল সমাবেশে
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ দেড়যুগ ধরে একদলীয় দুঃশাসনের যাঁতাকলে পিষ্ট ছিল। জনগণের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়ে দেশকে অন্ধকারে নিমজ্জিত করেছিল ফ্যাসিস্ট সরকার। বিএনপির ৩১ দফা সংস্কার কর্মসূচিই পারে এই অন্ধকার থেকে জাতিকে মুক্তি দিতে। আমরা এমন একটি রাষ্ট্র গড়তে চাই, যেখানে জনগণই হবে ক্ষমতার একমাত্র উৎস।
তিনি আরও বলেন, ধানের শীষ হচ্ছে মানুষের ভোটাধিকার, ন্যায়বিচার ও স্বাধীনতার প্রতীক। আগামী নির্বাচনে ধানের শীষের বিজয়ের মধ্য দিয়েই গণতন্ত্রের পুনর্জাগরণ ঘটবে। জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠিত না হওয়া পর্যন্ত বিএনপির আন্দোলন চলবেই চলবে।
৩১ দফার তাৎপর্য তুলে ধরে কালীগঞ্জ উপজেলা বিএনপি'র আহ্বায়ক জাহাঙ্গীর আলম আরো বলেন, এই কর্মসূচির মাধ্যমে আমরা প্রতিশ্রুতি দিয়েছি বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, প্রশাসনের জবাবদিহিতা, দুর্নীতির অবসান ও জনগণের অংশগ্রহণমূলক শাসনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার। ৩১ দফাই হচ্ছে নতুন বাংলাদেশের রূপরেখা।
কালীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সদস্য-সচিব আমিনুল ইসলামের সভাপতিত্বে উপজেলা বিএনপি'র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আজাদ বাবুর সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন কালীগঞ্জ উপজেলা বিএনপি'র অন্যতম সদস্য ফারহান উদ্দিন পাশা, যুবদলের আহ্বায়ক জাহাঙ্গীর আলম আঙ্গুর, সাধারণ সম্পাদক কুদরতি মেহেরবান মিঠুসহ বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দ ।
সমাবেশে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের হাজার হাজার নেতাকর্মীরা রংবেরঙের ব্যানার ফেস্টুন নিয়ে সমাবেশে যোগ দেন।
জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আমি জীবনের শুরু থেকে বিএনপি'র রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। অনেক প্রতিকূলতা পেরিয়ে দলের জন্য কাজ করেছি। বিগত ফ্যাসিস সরকারের আমলে অনেক মামলা-হামলা-ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছি।
এ সময় তিনি আবেগে অশ্রুসিক্ত হয়ে পড়েন। তিনি নিজে কাঁদেন, সমাবেশের হাজারো মানুষকে কাঁদান। তিনি বলেন,"আমি আমার পরিবারকে ফাঁকি দিয়েছি,আমার সন্তানদেরকে ফাঁকি দিয়েছি। কিন্তু, আমার দলকে ফাঁকি দেইনি। এসময় উপস্থিত নেতাকর্মীরাও আবেগ প্রবণ হয়ে পড়েন। সবাই দাঁড়িয়ে তাকে শতস্ফুর্ত সমর্থন জানান। তারা আগামী নির্বাচনে জাহাঙ্গীর আলমকে ভোট দিবেন বলে অঙ্গীকার ব্যক্ত করে সমস্বরে শ্লোগানে শ্লোগানে মুখরিত হয়ে উঠেন সবাই। ‘জাহাঙ্গীর ভাই এগিয়ে চল, আমরা আছি তোমার সাথে’ স্লোগান দিতে থাকেন।
জাহাঙ্গীর আলম কালীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির আহবায়ক, দীর্ঘদিন ধরে তিনি বিএনপি'র রাজনীতিতে জড়িত। তিনি একাধারে টানা তিনবার চন্দ্রপুর ইউপি চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। মাঝে তিনি বিএনপি থেকে মনোনয়ন নিয়ে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করেছিলেন।