শনিবার, ১৪ জুন ২০২৫, ৩০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২
সর্বশেষ বিশেষ সংবাদ জাতীয় সারাদেশ আন্তর্জাতিক খেলা বিনোদন বাণিজ্য লাইফস্টাইল আইন-আদালত মতামত অন্যান্য
/ সারাদেশ

আমরা শুধু অভিযান স্থগিত রেখেছি-মোদি


প্রকাশ :

জম্মু-কাশ্মিরের পেহেলগামে সাম্প্রতিক সন্ত্রাসী হামলার জন্য সরাসরি পাকিস্তানকে দায়ী করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তিনি স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন, ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে বর্তমানে যে যুদ্ধবিরতি চলছে, তা পুরোপুরি শর্তসাপেক্ষ। পাকিস্তান যদি সন্ত্রাসবাদ দমনে কার্যকর পদক্ষেপ না নেয়, তবে এই যুদ্ধবিরতি যেকোনো সময় ভেঙে যেতে পারে বলে সতর্ক করেছেন তিনি।

সোমবার জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে মোদি বলেন, “সন্ত্রাসবাদ দমনে আমরা নতুন নীতি গ্রহণ করেছি। এখন থেকে সন্ত্রাসী ও যেসব রাষ্ট্র সন্ত্রাসবাদে মদত দেয়— তাদের প্রতি আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি একই হবে। ভারত কোনো রাষ্ট্রের পারমাণবিক ব্ল্যাকমেইলও সহ্য করবে না।”

গত ২২ এপ্রিল জম্মু-কাশ্মিরের অনন্তনাগ জেলার পেহেলগামের বৈসরন উপত্যকায় একদল সন্ত্রাসী হামলা চালিয়ে ২৬ জন পর্যটককে হত্যা করে। নিহতরা সবাই পুরুষ এবং অধিকাংশই হিন্দু ধর্মাবলম্বী ছিলেন। এ ঘটনার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ‘দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট’ (টিআরএফ) নামের একটি জঙ্গি সংগঠন হামলার দায় স্বীকার করে। ভারতের প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, টিআরএফ আসলে পাকিস্তান-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মিরভিত্তিক জঙ্গি গোষ্ঠী লস্কর-ই তৈয়বার একটি শাখা।

এই হামলার প্রতিক্রিয়ায় ভারত একাধিক কূটনৈতিক পদক্ষেপ গ্রহণ করে, যার মধ্যে রয়েছে সিন্ধু নদীর পানি বণ্টন চুক্তি পর্যালোচনা এবং পাকিস্তানি নাগরিকদের ভিসা বাতিল। পাল্টা জবাবে পাকিস্তানও ভারতের জন্য আকাশসীমা বন্ধ ও ভিসা বাতিলের মতো পদক্ষেপ নেয়।

চলমান এই উত্তেজনার মধ্যেই গত মঙ্গলবার ভারতের প্রতিরক্ষা বাহিনী ‘অপারেশন সিঁদুর’ নামে একটি সংক্ষিপ্ত সামরিক অভিযান চালায় পাকিস্তান-অধিকৃত কাশ্মিরসহ কয়েকটি এলাকায়। নয়াদিল্লির তথ্যমতে, অভিযানে অন্তত ৭০ জন পাকিস্তানি সন্ত্রাসী নিহত হয়েছে। অন্যদিকে, পাকিস্তানের দাবি— নিহতের সংখ্যা ৩১ এবং আহত হয়েছে ৫৭ জন।

মোদি তাঁর ভাষণে ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর ভূয়সী প্রশংসা করে বলেন, “আমাদের বোনদের সিঁথির সিঁদুর যারা মুছে দিয়েছিল, তাদের উপযুক্ত জবাব দেওয়ার জন্যই এই অভিযান পরিচালিত হয়েছে। এটি আমাদের নতুন নীতির প্রথম বাস্তব প্রয়োগ।”

তিনি আরও যোগ করেন, “আমরা কিন্তু অভিযান বন্ধ করিনি, শুধু স্থগিত রেখেছি। এর ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে পাকিস্তানের আচরণের ওপর।”