বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের মহাসচিব কাদের গনি চৌধুরী বলেছেন, "সত্য প্রকাশই হোক গণমাধ্যমের একমাত্র অঙ্গীকার।"
আজ কক্সবাজার প্রেসক্লাবে কক্সবাজার সাংবাদিক ইউনিয়নের আয়োজনে অনুষ্ঠিত এক আলোচনা সভায় তিনি এই মন্তব্য করেন।
কাদের গনি চৌধুরী বলেন, “গত ১৬ বছরে গণমাধ্যম সত্য প্রকাশ করতে পারেনি। এখন ফ্যাসিবাদের পতন ঘটেছে, আর কোনো বাধা নেই সত্য লিখতে। এই সময়ে আমাদের প্রয়োজন মানসিকতার পরিবর্তন।” সাংবাদিক কামাল হোসেন আজাদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ওবায়দুর রহমান শাহীন।
আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য দেন সিনিয়র সাংবাদিক নুরুল ইসলাম হেলালি, এস এম আমিনুল হক চৌধুরী, আতাহার ইকবাল, মমতাজ উদ্দিন বাহারি, আবু সিদ্দিক ওসমানি, শামসুল হক শারক এবং এম আর মাহবুব। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন এস এম জাফর।
কাদের গনি চৌধুরী বলেন, “সাংবাদিকতা হচ্ছে সত্যের আরাধনা। এখানে মিথ্যার কোনো জায়গা নেই। যেমন ১০০ তে ১০০ না পেলে কেউ দেশপ্রেমিক হতে পারে না, তেমনি শতভাগ সত্য না হলে সংবাদও সংবাদ হয় না।”
তিনি আরো বলেন, “সাংবাদিকের মূল দায়িত্ব হলো সত্য উদঘাটন ও তা সমাজে তুলে ধরা। প্রতিবেদক থেকে সম্পাদক—সবার কিছু মৌলিক দায়িত্ব রয়েছে যা এড়িয়ে গিয়ে সাংবাদিকতা করা সম্ভব নয়।”
সাংবাদিকতার ভিত্তি তথ্য সংগ্রহের বাইরে গিয়েও ‘তথ্য যাচাই’ বা ভেরিফিকেশন যা একপ্রকার সত্য প্রতিপাদন তাতে গুরুত্ব আরোপ করেন তিনি।
কাদের গনি চৌধুরী বলেন, “সত্য প্রকাশ করতে গিয়ে সাংবাদিকদের চাকরি, জীবনসহ নানা রকম ঝুঁকি নিতে হয়। এই ঝুঁকি না নিলে সত্য প্রতিষ্ঠিত হবে না। সাংবাদিকরা আত্মসমর্পণ করতে পারেন না। বিগত সরকারের আমলে বহু সাংবাদিককে আমরা সেল্ফ সেন্সরশিপে আত্মসমর্পণ করতে দেখেছি।”
তিনি বলেন, “সত্য প্রকাশে বাধা এলেও সাধারণ মানুষ সবসময় সাংবাদিকদের পাশে দাঁড়ায়। জীবনেও কোনো অবস্থায় মিথ্যার সঙ্গে আপস করা চলবে না। সত্যের জন্য দৈত্যের সঙ্গে লড়াই করাই হচ্ছে প্রকৃত সাংবাদিকতা।”
“সাংবাদিকতা সবচেয়ে জীবন্ত, আধুনিক এবং বুদ্ধিবৃত্তিক পেশা। এটি কখনো মূর্খজনের পেশা হতে পারে না। একজন সাংবাদিককে অবশ্যই অতীত জানার পাশাপাশি বর্তমান বিশ্লেষণ করে ভবিষ্যতের নির্দেশনা দিতে সক্ষম হতে হবে,” বলেন কাদের গনি চৌধুরী।
তিনি বলেন, “ভাষা, ব্যাখ্যা ও উপস্থাপনায় মেধার ছোঁয়া না থাকলে সাংবাদিক হওয়া যায় না। কিছু মৌলিক কাঠামো সাংবাদিকতাকে শক্ত ভিত্তি দিয়েছে, যা এই পেশাকে আধুনিক করেছে।”
তিনি বলেন, “আমরা গণমাধ্যমের স্বাধীনতার কথা বলি, কিন্তু নৈতিকতা ও দায়িত্বশীলতার বিষয়টি প্রায়শই উপেক্ষিত হয়। সংবাদ মাধ্যমের প্রথাগত দায়িত্ব হলো—মানুষকে তথ্য জানানো, শিক্ষিত ও সচেতন করে তোলা এবং প্রাসঙ্গিক আলোচনার মাধ্যমে মানুষকে উদ্দীপ্ত করা।”শেষে তিনি বলেন, “একটি সমাজে যদি চিন্তা ও বিবেকের স্বাধীনতা না থাকে, তবে সেখানে কখনোই সাহসী ও স্বাধীন সাংবাদিকতা বিকশিত হতে পারে না।”