রংপুর নগরীর ধাপ এলাকায় অভিযান চালিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত একটি হাসপাতালে অস্ত্রোপচাররত অবস্থায় অষ্টম শ্রেণি পাস এক ভুয়া ডাক্তারকে আটক করে তিন মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন। এ সময় বেসরকারি ইউনাইটেড হাসপাতালকে ৫০ হাজার টাকা এবং কমফোর্ট হাসপাতালকে এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সিভিল সার্জন ডা. শাহীন সুলতানার উপস্থিতিতে ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ইশরাত জাহান মিশুর নেতৃত্বে ইউনাইটেড হাসপাতালে অভিযান চালানো হয়। এ সময় দেখা যায়, গাইবান্ধার পলাশবাড়ি উপজেলার পশ্চিম গোপীনাথপুর গ্রামের প্রসূতি ময়না বেগম (২৬) সন্তান জন্ম দেওয়ার পর সেলাই করছেন হাসপাতালের কর্মচারী প্রশান্ত নামের এক যুবক। প্রথমে তিনি নিজেকে চিকিৎসক দাবি করলেও পরে স্বীকার করেন, তিনি চিকিৎসক নন, মাত্র অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছেন।
ঘটনাস্থল থেকে পালানোর চেষ্টা করে প্রশান্ত বোরকা পরে দুই ঘণ্টা টয়লেটে লুকিয়ে ছিলেন। পরে তাকে আটক করে আদালতে হাজির করা হলে তিন মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। হাসপাতালের মালিক সামসুদ তিবরীজকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে তিন দিনের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। তবে তিনি তাৎক্ষণিক জরিমানার টাকা পরিশোধ করায় জেল এড়াতে সক্ষম হন।
অন্যদিকে বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে নগরীর মেডিকেল মোড় এলাকায় কমফোর্ট হাসপাতালে অভিযান চালায় ভ্রাম্যমাণ আদালত। লাইসেন্স নবায়ন না থাকা, অপারেশন থিয়েটারের পরিবেশ মানসম্মত না হওয়া, প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম ও নার্স-চিকিৎসক সংকটের কারণে হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটার সিলগালা করা হয়। একইসঙ্গে হাসপাতালের মালিক আব্দুল্লাহিল কবিরকে এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।
অভিযানে সিভিল সার্জন কার্যালয়ের মেডিকেল অফিসার ডা. মাইনুল ইসলামসহ অন্যান্য কর্মকর্তা ও পুলিশ সদস্যরা অংশ নেন। তিনি বলেন, প্রতিদিনই অবৈধ বা নিয়মবহির্ভূতভাবে পরিচালিত ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে অভিযান চালানো হচ্ছে, যেন রোগীরা প্রতারিত না হয় এবং জীবন ঝুঁকিতে না পড়ে।