জানা যায়, শনিবার রাত তিনটার দিকে অফিস থেকে ট্রাকে করে মালামাল সরানো হচ্ছে—এমন খবর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে আশপাশের গ্রাহকরা ঘটনাস্থলে জড়ো হন। এ সময় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। তারা অফিসের সামনে থাকা ট্রাকটি আটক করে এবং জোনাল অফিসের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট (এসভিপি) আব্দুল কাদের বীরকে অবরুদ্ধ করে রাখেন।
খোরশেদ আলম, আব্দুল হাকিম ও হুমায়ুন কবিরসহ বিক্ষুব্ধ গ্রাহকরা অভিযোগ করেন, বছরের পর বছর ধরে বীমার পরিশোধিত টাকা তারা ফেরত পাচ্ছেন না। অথচ অফিস হঠাৎ রাতের আঁধারে মালামাল পাচার করছে—যা প্রতারণার ইঙ্গিত দেয়। তারা বলেন, “আমাদের আমানতের টাকা ফেরত না পেয়ে আমরা চরম কষ্টে আছি। প্রশাসন দ্রুত হস্তক্ষেপ না করলে আন্দোলন আরও তীব্র হবে।”
এ বিষয়ে ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের এসভিপি আব্দুল কাদের বীর বলেন, “আমরা অফিসের পুরনো আসবাবপত্র বিক্রি করছিলাম নতুন অফিসে স্থানান্তরের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে। ভুল বোঝাবুঝির কারণেই গ্রাহকরা উত্তেজিত হয়েছেন। আমাদের পর্যাপ্ত সম্পদ রয়েছে; তা বিক্রি করেই গ্রাহকদের পাওনা পরিশোধ করা হবে। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে আমাদের কোম্পানির অনেক সম্পদ দখল হয়ে গেছে। আমরা আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তা পুনরুদ্ধার করে গ্রাহকদের টাকা ফেরত দেব।”
ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে রংপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (এডিসি) রমিজ আলম বলেন, “এই অফিসের আওতায় প্রায় ৭০ হাজার বীমা গ্রাহক আছেন, যাদের বকেয়া পাওনা প্রায় ১৩৭ কোটি টাকা। দীর্ঘদিন ধরে তারা টাকা ফেরত পাচ্ছেন না। আমরা কোম্পানির কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেছি এবং বীমা নিয়ন্ত্রক সংস্থার সঙ্গেও যোগাযোগের উদ্যোগ নিচ্ছি, যাতে দ্রুত গ্রাহকদের টাকা পরিশোধ হয়। অফিস থেকে যে মালামাল নামানো হয়েছিল, সেগুলো আপাতত এখানেই থাকবে। আমরা নিশ্চিত করছি, তাদের জমি বা সম্পদ বিক্রির কোনো প্রক্রিয়া যেন না হয়। বিষয়টি দ্রুত ও শান্তিপূর্ণভাবে সমাধানের জন্য প্রশাসন সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে।”
রোববার বিকেল তিনটা পর্যন্ত কর্মকর্তাদের আশ্বাসে আশ্বস্ত হতে না পেরে বীমা গ্রাহকরা এ খবর লেখা পর্যন্ত সড়ক অবরোধ করে রেখেছেন। গ্রাহকদের দাবি, টাকা না পাওয়া পর্যন্ত অবরোধ চলবে।