মঙ্গলবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৫, ৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
সর্বশেষ বিশেষ সংবাদ জাতীয় সারাদেশ আন্তর্জাতিক খেলা বিনোদন বাণিজ্য লাইফস্টাইল আইন-আদালত মতামত অন্যান্য
/ সারাদেশ

শ্বশুড়ের যৌন হয়রানি, রংপুরে ভিডিও ফাঁস হওয়ায় পুত্রবধূকে হত্যার অভিযোগ


প্রকাশ :

রংপুর নগরীতে শ্বশুরের অনৈতিক কাজের প্রস্তাবে রাজি না হয় মিতু বানু নামে এক গৃহবধূকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) সকালে নগরীর বালাপাড়া এলাকায় ঘটেছে। খবর পেয়ে দুপুরে ওই গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার করেছে হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে মহানগর পুলিশ।

অভিযোগ উঠেছে, শ্বশুড়ের যৌন হয়রানির একটি ভিডিও ফাঁস হওয়াকে কেন্দ্র করে পুত্রবধূ মিতু বানুকে সিলিং ফ্যানে ঝুলে রেখে হত্যা করা হয়েছে। এনিয়ে তোলপাড় পুরো এলাকা।নিহত মিতু বানু বদরগঞ্জ উপজেলার কুতুবপুর ইউনিয়নের নাটারাম গ্রামের মেনাজুল মিয়ার মেয়ে।

রংপুর মেট্রোপলিটন কোটালী থানা পুলিশ জানায়, স্থানীয়দের কাছ থেকে খবর পেয়ে বেলা তিনটার দিকে রংপুর নগরীর বালাপাড়ায় সোহান মিয়ার বাড়ির নিজ ঘর থেকে তার স্ত্রী মিতু বেগমের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

পরিবারের সদস্যদের উদ্ধৃতিয়ে পুলিশ  জানায়, পরিবারের সদস্যরা ডাকাডাকির পর সাড়া শব্দ না পেয়ে ঘরের দরজা ভেঙে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় পায় মিতু বানুকে। পরে ওড়না কেটে নামিয়ে হাসপাতালে নেয়ার চেষ্টা করে স্বজনরা। খবর পেয়ে মিতুর ভাইসহ পরিবারের লোকজন ছুটে আসলে তাদের মারধর করে স্বামীর বাড়ির লোকজন।

স্থানীয়রা জানান, মিতু বানুর স্বামী সাহানুর রহমান সোহান মাদকাসক্ত। তার শ্বশুড় রাজা মিয়া জোরপূর্বক পুত্রবধূর সাথে বিভিন্ন অনৈতিক কাজ করেন। যৌন হয়রানির এরকম একটি সম্প্রতি ফাঁস হয়। সেখানে দেখা যায় মিতু বানু তার ঘরের ভিতরে শিশুসন্তানকে নিয়ে শুয়ে আছেন। হঠাৎ সাহানুরের বাবা রাজা মিয়া ওই ঘরে গিয়ে মিতুর শরীরের স্পর্শকাতর স্থানে হাত দেয়।

এদিকে এ ঘটনা জানাজানি হলে এলাকার পরিস্থিতি থমথমে হয়ে উঠে। ঘটনাস্থলে পুলিশ মিতুর স্বামী সোহানুরকে আটক করে। কিন্তু স্থানীয়দের বাধার মুখে সোহানুরকে ছিনিয়ে নিয়ে যায় তার লোকজন।

 এ বিষয়ে জানতে সোহানুরের বাসায় গিয়ে দেখা যায় গেটের মধ্যে তালা ঝুলছে। বাসার ভিতরে কেউ নেই। এ কারণে তার পরিবারের কারো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

নিহত গৃহবধূর মামা শফি আলম বলেন, তিন বছর আগে আমার ভাগ্নির সাথে সোহানুর রহমান সোহানের সাথে বিয়ে দেওয়ার জন্য আমার হাত পা ধরেছিল রাজা মিয়া। আমার ভাগ্নির ১০  মাসের একটি বাচ্চা আছে। শিশু বাচ্চা ঘরে থাকা অবস্থায় এরকম কাজ করে কেমন করে। এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষীদের বিচারের দাবি করছি।

রংপুর মেট্রোপলিটন কোতোয়ালি থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আতাউর রহমান বলেন, নিহত মিতু বানুর মরদেহ উদ্ধার করে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের পরই স্পষ্ট হবে ঘটনাটি হত্যা না আত্মহত্যা। যৌন হয়রানির একটি ভিডিও পাওয়া গেছে। ওই ভিডিওটিকে ক্লু হিসেবে ধরে তদন্ত চলছে। এ ঘটনায় নিহতের পরিবার থেকে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।