জাপান এয়ারলাইন্সের বোয়িং ৭৩৭ এর একটি ফ্লাইট মাঝ আকাশে যান্ত্রিক ত্রুটির শিকার হয়ে হঠাৎ প্রায় ২৬ হাজার ফুট নিচে নেমে আসে। এতে অক্সিজেনের ঘাটতি দেখা দিলে যাত্রীদের জন্য খুলে দেওয়া হয় অক্সিজেন মাস্ক। ভয়াবহ সেই মুহূর্তে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন বিমানের যাত্রীরা। ওই সময় যাত্রীরা কেউ কেউ পরিবারের উদ্দেশ্যে শেষ লেখা লিখে ফেলেন- এমনটিই জানিয়েছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো।
ঘটনাটি ঘটে সোমবার (৩০ জুন) সন্ধ্যায়। জাপান এয়ারলাইন্সের সহযোগী সংস্থা স্প্রিং জাপানের ফ্লাইট জেএল৮৬৯৬/আইজে০০৪ চীনের সাংহাই পুডং বিমানবন্দর থেকে টোকিওর নারিতা বিমানবন্দরের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। বিমানে ১৯১ জন যাত্রী ও ক্রু ছিলেন।
দেশটির গণমাধ্যম বরাতে জানা যায়, স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টা ৫৩ মিনিটের দিকে বিমানে হঠাৎ প্রেসারাইজেশন সিস্টেমে সমস্যা দেখা দেয়। এতে মাত্র ১০ মিনিটের মধ্যে উড়োজাহাজটি প্রায় ৩৬ হাজার ফুট উচ্চতা থেকে ১০ হাজার ৫০০ ফুট নিচে নেমে আসে। সঙ্গে সঙ্গে সক্রিয় হয় বিমানের জরুরি সুরক্ষা ব্যবস্থা। এই সময় খুলে দেওয়া অক্সিজেন মাস্ক। আর যাত্রীরা আতঙ্কে অনেকেই চিৎকার করে কাঁদতে থাকেন, অনেকে ভাবেন তাদের আর জীবিত ফেরা হবে না।
এক যাত্রী মার্কিন সংবাদ মাধ্যম এপিকে জানান, একটা শব্দ হলো, কয়েক সেকেন্ডেই মাস্ক খুলে গেল। বিমানবালা চিৎকার করে বলছিলেন, ‘মাস্ক পড়ুন, সমস্যা হয়েছে।’
আরেক যাত্রী জানান, ‘ঘুম থেকে উঠে দেখি, সবাই মাস্ক পড়ে আছে।’
আরেক আতঙ্কগ্রস্ত যাত্রী বলেন, ‘আমি তখন কেঁদে ফেলি। নিজের ইনস্যুরেন্স, ব্যাংক কার্ডের পিন নম্বর লিখে রেখে দিই পরিবারের জন্য।’
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পাইলট দ্রুত সিদ্ধান্ত নিয়ে ফ্লাইটটি ওসাকার কানসাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে জরুরি অবতরণ করান। স্থানীয় সময় রাত ৮টা ৫০ মিনিটে নিরাপদে অবতরণ করে বিমানটি। কোনো যাত্রী আহত হননি। এরই মধ্যে বিমানটির যান্ত্রিক সমস্যার কারণ অনুসন্ধানে তদন্ত শুরু করেছে জাপানের পরিবহন মন্ত্রণালয়। যাত্রীদের জন্য ১৫ হাজার ইয়েন (প্রায় ৯৩ ডলার) করে যাতায়াত ক্ষতিপূরণ ও এক রাতের হোটেল ব্যবস্থা করেছে কর্তৃপক্ষ। এ বিষয়ে জাপান এয়ারলাইন্স বা দেশটির পরিবহন মন্ত্রণালয় এখনো আনুষ্ঠানিক কোনো মন্তব্য দেয়নি।