রংপুর কারমাইকেল কলেজে একাডেমিক ভবন, অডিটরিয়াম, আবাসিক হল নির্মাণ, শিক্ষক নিয়োগ, নতুন বিভাগ চালু, যাতায়াতের জন্য বাস সংস্থান, নিরাপত্তার জন্য পুলিশ বক্স স্থাপনসহ ৩৭ দফা দাবিতে তৃতীয় দিনের মতো ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি পালন করেছে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। সৃষ্ট সংকট সমাধানে শিক্ষা উপদেষ্টা ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে স্বশরীরে কারমাইকেল কলেজে আসার জন্য শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে আবারো আহ্বান জানানো হয়েছে। একই সাথে দাবি আদায়ে আগামীকাল (২৫ জুন)বুধবার রেল ও সড়কপথ অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন শিক্ষার্থীরা।সোমবার সকাল নয়টা থেকে ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি পালন করেন শিক্ষার্থীরা। এসময় তারা কলেজের প্রধান প্রবেশসহ সকল বিভাগ ও প্রশাসনিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে দেন। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা কলেজ প্রশাসনকে ২৫ দফা এবং শিক্ষা উপদেষ্টা ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বরাবর ১২ দফা দাবি জানিয়েছেন।
মঙ্গলবার (২৪ জুন) বেলা দুইটা পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা কলেজের প্রধান গেট বন্ধ করে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন। তাদের দাবি বাস্তবায়নে শিক্ষা উপদেষ্টা ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ক্যাম্পাসে না আসা পর্যন্ত অনির্দিষ্টকালের জন্য শাটডাউন কর্মসূচি অব্যাহত রাখার ঘোষণা দিয়েছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
গত দুইদিনের মতো তৃতীয় দিনেও কলেজ ক্যাম্পাস এলাকায় সেনাবাহিনীর সদস্যরা সতর্ক অবস্থানে ছিল। শান্তিপূর্ণ এই কর্মসূচিতে কলেজের বর্তমান শিক্ষার্থীদের সাথে সংহতি জানিয়ে প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীরা অংশ নেন।
শিক্ষার্থীরা জানান, শতবর্ষী ও ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠান হওয়া সত্বেও কারমাইকেল কলেজে প্রয়োজনীয় বিভাগ নেই, নেই আবাসিক হল, যাতায়াতের পর্যাপ্ত ব্যবস্থাও নেই। নিরাপত্তার জন্য একটি পুলিশ বক্স পর্যন্ত স্থাপন করা হয়নি। দীর্ঘদিন ধরেই এসব সমস্যার কথা বলে আসলেও কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।গত ‘৫ আগস্টের পর থেকে আমরা আন্দোলন শুরু করেছি। দশ মাস পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত শুধু আশ্বাস ছাড়া কোনো বাস্তব সমাধান পাওয়া যায়নি। এবার আমরা আর ছাড় দেব না। উন্নয়নের জন্য আন্দোলন চলবে।
কারমাইকেল কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক মোস্তাফিজার রহমান বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো নিয়ে আমরা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর এবং শিক্ষা উপদেষ্টার সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছি। ইতোমধ্যে লিখিত আকারে সব সমস্যার কথা জানানো হয়েছে। দাবিগুলোর বাস্তবায়ন করা হোক এবং শিক্ষার্থীরা আন্দোলন ছেড়ে শ্রেণি কক্ষে ফিরে আসুক।
উল্লেখ্য, গত রোববার থেকে ২১ দফা দাবিতে কারমাইকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা এই আন্দোলনে নেমেছে।