লালমনিরহাট জেলার তুষভান্ডর সাব- রেজিষ্ট্রার অফিস দলিল লেখক সমিতির সাবেক সভাপতি এটিএম মুসা শামীম ও তার ২ সহযোগীর বিরুদ্ধে ১১ লাখ টাকা আত্নসাতের অভিযোগ তুলেছেন সাধারণ দলিল লেখকরা। শামীম কালীগঞ্জ উপজেলা যুবলীগের সহ সভাপতি।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, কালীগঞ্জ উপজেলা তুষভান্ডার সাব রেজিস্ট্রি অফিসের দলিল লেখক সমিতির সাবেক সভাপতি দলিল প্রতি ২শত টাকা হারে চাঁদা তুলেন । তাছাড়াও ‘ দলিল লেখক সমিতির সদস্যদের সঞ্চিত ১১ লাখ টাকা আত্নসাৎ করার অভিযোগ রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে। দলিল লেখক সমিতির ৮৫ জন সদস্য তাদের আয়ের একটা অংশ সমিতির ফান্ডে সঞ্চয় করেন। সেই টাকা ঈদসহ বিশেষ সময় সকল সদস্য তা নিজেরা বন্টন করে নেন।
২০২৪ সালের ৮ মাসে সঞ্চায় জমা হয় প্রায় ১৮ লাখ টাকা। দুই ঈদে দলিল লেখকদের ৭ লাখ টাকা প্রদান করা হলেও বাকি ১১ লাখ টাকা সমিতির সাবেক সভাপতি শামীম ও তার সহযোগীরা আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ সদস্যদের। সহযোগীরা হলেন, দলিল লেখক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম ফরহাদ ও সাবেক ক্যাশিয়ার রফিকুল ইসলাম।
দলিল লেখককেরা সঞ্চিত টাকা দাবি করলে সমিতির সাবেক সভাপতি গর্জন করেন, এমনকি মারধর পর্যন্ত করেন। তার কথার বিরোধিতা করলে সমিতির ঘরে আটকে রেখে নির্যাতন করা হত বলেও দলিল লেখককেরা লেখিত অভিযোগ করেছেন।
গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগের পতনের পর থেকে আত্নসাৎ করা টাকা ফেরত দিতে চেয়েও ফেরৎ দেননি শামীম। এমনকি গত ঈদ উল ফিতরেও সমিতির সদস্যরা পাননি তাদের সঞ্চিত অর্থ। অবশেষে দলিল লেখক সমিতির সাধারন সদস্যরা তাদের সঞ্চিত টাকা উদ্ধারে সমিতির সাবেক সভাপতি শামীমের বিরুদ্ধে সাব রেজিস্টার বরাবরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
দলিল লেখক আব্দুল মতিন বলেন, বিগত দিনে শামীমের বিরুদ্ধে কোন কথা বলা যেত না। ৫ আগস্টের পর একটু স্বস্তিতে আছি। দলিল লেখক জিনাত হোসেন নোবেল বলেন, শামীমকে প্রত্যেক দলিলে দুইশত টাকা দিতে হতো। না দিলে দলিল আটকানো সহ সমিতির ঘরে অভিযোগকারীকে আটকে রাখা হতো। দলিল লেখক তৈয়ুবুর রহমান রাকু বলেন, দলীয় ক্ষমতার প্রভাবে শামীম সাব রেজিস্ট্রি অফিসে সিন্ডিকেট তৈরি করেছিলেন। ভুয়া দাতা তৈরী করেও দলিল সম্পাদন করতেন তিনি। দলিল লেখক আমিরুজ্জামান মতি বলেন, শামীম গত ১৫ বছরে চাঁদাবাজি করে অনেক অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন। সমিতির সদস্যদের সঞ্চয়ের ১১ লাখ টাকা আত্নসাৎ করেছেন তিনি।
তুষভান্ডার সাব রেজিস্ট্রি অফিসের দলিল লেখক সমিতির সাবেক সভাপতি শামীম বলেন, সমিতির নির্বাচনে হেরে গিয়ে আমার বিরুদ্ধে এ মিথ্যা অভিযোগ তুলেছে প্রতিপক্ষ। সমিতির উন্নয়ন মুলক কাজেই খরচ হয়েছে সমিতির টাকা।
তুষভান্ডার সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের সাব-রেজিস্টার (অতিঃ দাঃ) আরিফ ইসতিয়াক বলেন, অভিযোগটি পেয়েছি। তদন্ত করে বিধিমত ব্যবস্থা নেয়া হবে।