লালমনিরহাট বার্তা
নিয়োগে অনিয়ম দুই শিক্ষককে সরকারি বেতন ভাতা ফেরতের নির্দেশ
স্টাফ রিপোর্টারঃ | ৮ আগ, ২০২২, ১:২৫ PM
নিয়োগে অনিয়ম দুই শিক্ষককে সরকারি বেতন ভাতা ফেরতের নির্দেশ

লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার বুড়িমারী হাসর উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারি প্রধান শিক্ষক ও সহকারি শিক্ষকের নিয়োগ বিধি সম্মত হয়নি। এ কারণে ওই দুই শিক্ষকের নেওয়া সরকারি বেতন ভাতা ফেরতের নির্দেশ দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরিদর্শন ও নিরীক্ষণ অধিদপ্তর। এ সংক্রান্ত প্রতিবেদনের কপি গত ২৭ জুলাই পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রবিউল আলম খন্দকার।

জানা গেছে, ওই বিদ্যালয়ে ২০০৪ সালের ২৪ মে সহকারি শিক্ষক (কম্পিউটার) পদে যোগদান করেন মোখলেছার রহমান প্রধান। ওই বছরের ১ জুন কম্পিউটার শিক্ষক হিসেবে সরকারি এমপিও (মান্থলি পেমেন্ট অর্ডার) ভুক্ত হন তিনি।

পরবর্তীতে ২০১২ সালের ২৯ জুলাই সহকারি প্রধান শিক্ষক পদে যোগদান করেন মোখলেছার রহমান প্রধান। যোগদানের ৬ মাস পর সহকারি প্রধান শিক্ষক হিসেবে ১২ হাজার টাকা বেতন স্কেলে এমপিও ভুক্ত হন। শিক্ষক পদে নিয়োগ নীতিমালা ২০১০ সালের ৪ ফেব্রæয়ারি অনুযায়ী সহকারি শিক্ষক হিসেবে ১০ বছরের অভিজ্ঞতা সম্পন্ন শিক্ষকেরা সহকারি প্রধান হিসেবে নিয়োগের যোগ্য হবেন।

কিন্তু তিনি (মোখলেছার রহমান প্রধান) সহকারি শিক্ষক হিসেবে ওই বিদ্যালয়ে যোগদান ও প্রথম এমপিও হতে ১০ বছর অভিজ্ঞতা না হওয়ার পরও সহকারি প্রধান শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। এতে তাঁর (মোখলেছার রহমানের) নিয়োগ বিধি সম্মত হয়নি। এ কারণে ২০১৩ সালের ১ ফেব্রæয়ারি হতে ২০১৮ সালের ৩১ মার্চ তারিখ পর্যন্ত ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবে ৫ বছর ২ মাসে সরকারি কোষাগার হতে নেওয়া ১১ লাখ ২০ হাজার ৯১০ টাকা ফেরতের নির্দেশ দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তর।

একই বিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান পদে সহকারি শিক্ষক সফিদ আলী ২০১২ সালের ২৯ জুলাই নিয়োগ পান। শিক্ষক নিবন্ধন সনদ ছাড়া তাঁর নিয়োগও বিধি সম্মতভাবে হয়নি। ২০০৫ সালের ২০ মার্চ তারিখের পর বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সহকারি শিক্ষক পদে শিক্ষক নিবন্ধন ব্যতীত নিয়োগ ও সরকারি বেতন ভাতা প্রাপ্ত হবেন না। এ কারনে শিক্ষক সফিদ আলী ২০১২ সালের ১ নভেম্বর হতে ২০১৮ সালের ৩১ মার্চ তারিখ পর্যন্ত ৫ বছর ৫ মাসে এমপিও ভুক্ত হওয়ায় সরকারি বেতন ভাতা নেওয়া ৮ লাখ ৫ হাজার ২৮০ টাকা ফেরতের নির্দেশ একই অধিদপ্তর।

১৯৫৫ সালে প্রতিষ্ঠিত বুড়িমারী হাসর উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়। ২ বছর পর এ বিদ্যালয়টি মাধ্যমিক শিক্ষা পাঠের অনুমোদন পায়।

২০১৮ সালে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদপ্তর ঢাকার উপপরিচালক সাবেক শিক্ষা পরিদর্শক টুটুল কুমার নাগ বুড়িমারী হাসর উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়টি ২০১৮ সালের ১৪ মে অডিট করেন। অডিটের ৪ বছর পর প্রতিবেদনের কপি/চিঠি পায় বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এতে ওই দুই শিক্ষকের নিয়োগ বিধি সম্মত হয়নি উল্লেখ করে এমপিও ভুক্ত শিক্ষক হিসেবে সরকারি গ্রহন করা বেতন ভাতা ফেরতযোগ্য হিসেবে উল্লেখ করেন।

এ ব্যাপারে বর্তমান সহকারি শিক্ষক মোখলেছার রহমান বলেন, ‘প্রতিবেদন বা চিঠি নাকি এসেছে-শুনেছি। আপনারা খোঁজ নেন। আমি পারিবারিক শোকে আছি। কথা বলার মনমানসিকতা নাই।’

শিক্ষক সফিদ আলী বলেন, ‘এ প্রতিবেদনটিতে কোনো স্মারক নম্বর নাই। কে দিল, কিভাবে দিল এসব সুনিদ্দিষ্ট করা নাই। এজন্য এটাকে ভুয়া মনে করছি। বিদ্যালয়ের একটি সিনিয়র ও জুনিয়র চক্র আমাদেরকে বিব্রত করতে বহু ষড়যন্ত্র আগে করেছেন, এখনও করছেন। নিয়োগ সংক্রান্ত ব্যাপারে পূর্বে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা তদন্ত করেছে। প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংরক্ষিত আছে।’

এই বিভাগের আরও খবর