লালমনিরহাট বার্তা
হাতীবান্ধায় ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে মারধর করে ফাঁকা কাগজে স্বাক্ষর নেয়ার অভিযোগ
স্টাফ রিপোর্টার | ৩০ জুন, ২০২২, ১:৪৭ PM
হাতীবান্ধায় ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে মারধর করে ফাঁকা কাগজে স্বাক্ষর নেয়ার অভিযোগ
লালমনিরহাটের হাতীবান্ধার বড়খাতা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আবু হেনা মোস্তফা জামাল সোহেলের বিরুদ্ধে জহুরুল ইসলাম নামের একজনকে মারধর করে ফাঁকা কাগজে স্বাক্ষর নেয়ার অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে,ওই চেয়ারম্যানের নির্দেশে জমি সংক্রান্ত শালিস মীমাংসার বিচারের রায় মানতে দেরি হওয়ায় ৫ জন চৌকিদার বুধবার ভোরে ঘুমন্ত জহুরুলকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদের এক কক্ষে আটকে মারধর করে।পরে আটকানো জহুরুলকে চেয়ারম্যান আবু হেনা মোস্তফা জামাল সোহেলসহ ৩জন চৌকিদার পালাক্রমে মারধর করে জোর পূর্বক ফাঁকা কাগজে স্বাক্ষর নিয়ে ছেড়ে দেয়।বর্তমানে জহুরুল ইসলাম হাতীবান্ধা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছে। তিনি উপজেলার বড়খাতা ইউনিয়নের পশ্চিম সারডুবি গ্রামের জামাল উদ্দিনের ছেলে।জহুরুল ইসলাম বাদী হয়ে বুধবার রাতেই বড়খাতা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আবু হেনা মোস্তফা জামাল সোহেলসহ ৪জনকে অভিযুক্ত করে স্থানীয় থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অভিযোগ সুত্রে জানা যায়, ওই উপজেলার বড়খাতা ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ড পশ্চিম সারডুবি এলাকার আপন ভাই জহুরুল হকের সাথে নজরুল ইসলামের জমি সংক্রান্ত বিরোধ চলছিলো। এ বিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যান এক পক্ষ নিয়ে নজরুল ইসলামের পক্ষে রায় দেয়। বর্ষাকালের কারণে সেই বিচারের রায় মানতে দেরি হয় জহুরুল হকের। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে বুধবার ভোর সাড়ে ৫টার দিকে কয়েকজন জন গ্রাম পুলিশ দিয়ে বাড়ী থেকে জহুরুল হককে জোর করে তুলে ইউনিয়ন পরিষদে নিয়ে আসেন ইউপি চেয়ারম্যান। গ্রাম পুলিশের সঙ্গে আসতে অস্বীকৃতি জানালে বাড়ির উঠানে জহুরুল হককে ধমক দিয়ে নিয়ে আসেন। পরে ওই দিন সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ইউনিয়ন পরিষদের হলরুমে তাকে ঢুকিয়ে দরজা -জানালা বন্ধ করে দিয়ে বাঁশের লাঠি দিয়ে নির্মমভাবে নির্যাতন করেন চেয়ারম্যান ও তার ৩ চৌকিদার।জহুরুলের দাবী তাকে পঙ্গু করতে বাঁশের লাঠি দিয়ে তার হাত ও পায়ের নক, আঙ্গুলসহ বিভিন্ন স্থানে নির্যাতন করা হয় ।আটক অবস্থায় জহুরুল হক কান্নাকাটি করলে ওই ইউপি চেয়ারম্যান প্রাণনাশসহ বিভিন্ন প্রকার হুমকি দিয়ে নিজের দোষ ঢেকে রাখতে জোরপূর্বক ফাঁকা কাগজে স্বাক্ষর নেয়। সেখানে থেকে মুক্তি পেলে, অসুস্থ জহুরুলকে পরিবারের লোকজন স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করান।
নির্যাতনের স্বীকার জহুরুল হক সাংবাদিকদের বলেন, আমি চোর নই, ডাকাত নই, মাদক ব্যবসায়ী নই অথচ বিনা অপরাধে ঘুম থেকে তুলে এনে আটকিয়ে আমাকে নির্যাতন করেছে ইউপি চেয়ারম্যান সোহেল এবং ৩ জন গ্রাম পুলিশ।
তবে এ বিষয়ে অভিযোগ অস্বীকার করে ইউপি চেয়ারম্যান আবু হেনা মোস্তফা জামাল সোহেল বলেন, তার কোর্টে একটি মামলা রয়েছে, সে কোর্টের মামলায় হাজির হয় না, তাই তাকে ডেকে এনেছি। অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি ফাঁকা কাগজে স্বাক্ষর নেয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, এগুলো মিথ্যা ও ভিত্তিহীন কথা।
হাতীবান্ধা থানার অফিসার ইনচার্জ এরশাদুল আলম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, বড়খাতা ইউপি চেয়ারম্যান এর বিরুদ্ধে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি । বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এই বিভাগের আরও খবর