১৯২৬ সালে মওলানা ভাসানীর কৃষক প্রজাদের নিয়ে সাংগঠনিক তৎপরতা ও সামন্ত বাদ বিরোধী আন্দোলন দেখে জমিদাররা রীতিমত ভয় পেয়ে যান। কি করে ভাসানীর মুখ বন্ধ করা যায়, কি করে কৃষক সমিতি সংগঠিত করার কাজ বন্ধ করা যায়, তাই সামন্ত প্রভুদের ভাবনা। নচেৎ কৃষক লাঠিয়াল বাহিনির হাতে প্রাণটা যেতে পারে।
জমিদারদের অভিযোগে বাংলার গভর্ণর মওলানা ভাসানীকে বাংলাদেশে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে ও বাংলা থেকে বহিস্কারের আদেশ দেন। পরে মওলানা ভাসানী বাংলা থেকে আসামের ঘাগমারায় জঙ্গল পরিস্কার করে বাড়ি ঘর নির্মাণ পূর্বক বসবাস করতে থাকেন। অতি অল্প দিনেই তার জনপ্রিয়তা বেড়ে যায়।
লোকে ঘাগমারার নতুন নামকরণ করেন মওলানা ভাসানীর নামে হামিদাবাদ। মওলানা ভাসানী সেখানে স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, মক্তব, মসজিদ ও দাতব্যখানা প্রতিষ্ঠা করেন। অল্পকাল পরেই তিনি চলে যান ধুবড়ীর ভাসান চরে। সেখানেও গড়ে তুলেন বহু স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, মক্তব ও দাতব্য চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান। তার বহু ভক্ত অনুরক্তর সংখ্যা বেড়ে যায়।
দূবদূরান্ত থেকে লোকজন তার কাছে আসে তাবিজ-কবজ ও পানি পড়ার জন্য। মওলানা ভাসানী যেহেতু একজন আধুনিক প্রগতিশীল চেতনার মানুষ, তাই তিনি পানি পড়ার পাশাপাশি লোকজনকে ঔষধ কিনে খেতে বলেন। লোক তাকে ডাকতে থাকেন ভাসানচরের মওলানা বলে। সেই থেকে তার নামের সঙ্গে মওলানা ভাসানী বিশেষণটি যুক্ত হয়ে আছে। এক বাক্যে মওলানা ভাসানী নামেই মানুষ তাকে চেনে, জানে ও তিনি বিখ্যাত হয়ে আছেন।(গ্রন্থ:-অনন্য মওলানা ভাসানী জীবন ও সংগ্রাম)