লালমনিরহাট বার্তা
ইউরোপে করোনায় সাত লাখ মানুষের মৃত্যুর আশঙ্কা
বার্তা অনলাইন ডেস্কঃ | ২৪ নভে, ২০২১, ২:১৮ PM
ইউরোপে করোনায় সাত লাখ মানুষের মৃত্যুর আশঙ্কা
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ইউরোপে চলমান করোনা সংকটের প্রেক্ষাপটে গুরুতর সতর্কবাণী শুনিয়েছে৷ পরিস্থিতি মোকাবিলায় বুধবার থেকে জার্মানির একাধিক রাজ্যে আরো কড়া বিধিনিষেধ চালু হচ্ছে৷
শীতকালে ইউরোপের বিভিন্ন প্রান্তে করোনা ভাইরাস নতুন করে মাথাচাড়া দেওয়ায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা মারাত্মক পরিণতির আশঙ্কা করছে৷ বর্তমান প্রবণতা চলতে থাকলে আগামী বছরের ১লা মার্চের মধ্যে ৫৩টি দেশে করোনায় আক্রান্ত হয়ে প্রায় সাত লাখ মানুষের মৃত্যুর আশঙ্কা করছে ডাব্লিউএইচও৷ উল্লেখ্য, করোনা সংকটের শুরু থেকে এই অঞ্চলে এখনো পর্যন্ত ১৫ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়েছে৷ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা যে ৫৩টি দেশকে ইউরোপীয় অঞ্চলের অন্তর্গত করে, সেখানে স্বাস্থ্য পরিষেবা কাঠামোর উপর মারাত্মক চাপেরও পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে৷ ৪৯টি দেশে হাসপাতালের ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটের উপর প্রচণ্ড চাপের আশঙ্কা রয়েছে৷
ইউরোপীয় অঞ্চলের কয়েকটি দেশে করোনা টিকাদান কর্মসূচির দুর্বলতা চরম ছোঁয়াচে ডেল্টা সংস্করণের প্রসার আরও সহজ করে তুলেছে বলে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা মনে করে৷ তার উপর অনেক নিয়ম তুলে নেওয়ায় ঠাণ্ডার মাসগুলিতে বদ্ধ জায়গায় মানুষেক সমাবেশ সংক্রমণ আরও তরান্বিত করছে৷ অস্ট্রিয়া, জার্মানি ও নেদারল্যান্ডসের মতো দেশ নতুন করে কড়া বিধিনিষেধ চাপিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করেও এখনো সংকট সামলাতে পারছে না৷
ডাব্লিউএইচও-র ইউরোপীয় অঞ্চলের দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান হান্স ক্লুগে পরিস্থিতি সামাল দিতে কিছু পরামর্শ দিয়েছেন৷ তার মতে ‘ভ্যাকসিন প্লাস' নীতির মাধ্যমে ১লা মার্চের মধ্যে এক লাখ ৬০ হাজার মানুষের মৃত্যু এড়ানো সম্ভব হতে পারে৷ অর্থাৎ টিকাদান কর্মসূচিতে গতি আনার পাশাপাশি সামাজিক দূরত্ব, মাস্ক ও হাত ধোয়ার নিয়ম চালু করতে হবে৷ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সূত্র অনুযায়ী মাস্কের ব্যবহার করোনা সংক্রমণের হার ৫৩ শতাংশ কমিয়ে আনতে পারে৷
জার্মানির একাধিক রাজ্যে বুধবার থেকে সুযোগ সত্ত্বেও করোনা টিকা না নেওয়া মানুষের প্রবেশাধিকার সঙ্কুচিত করা হচ্ছে৷ এমনকি এমন মানুষ করোনা টেস্ট ছাড়া গণপরিবহণ ব্যবস্থাও ব্যবহার করতে পারবেন না৷ সেইসঙ্গে করোনা টিকা বাধ্যতামূলক করার বিষয়টি নিয়ে বিতর্কও দানা বাঁধছে৷ অনেক বিশেষজ্ঞ ও রাজনীতিকের মতে, এখনই এমন পদক্ষেপের সুফল না পাওয়া গেলেও ভবিষ্যতে করোনা সংক্রমণের সম্ভাব্য পঞ্চম ঢেউ মোকাবিলার জন্য এই সিদ্ধান্তের প্রয়োজন৷ সমাজের বৃহত্তর স্বার্থে এ ক্ষেত্রে ব্যক্তিস্বাধীনতা সঙ্কুচিত করা বৈধ বলে অনেক আইন বিশেষজ্ঞও মনে করছেন৷ তবে এমন পদক্ষেপ কার্যকর করার পদ্ধতি নিয়ে স্পষ্ট নীতিমালার ডাক দিচ্ছেন অনেক বিশেষজ্ঞ৷
আগামী ৯ই ডিসেম্বর জার্মানির ফেডারেল ও রাজ্য সরকারগুলির মধ্যে শীর্ষ বৈঠকে আবার পরিস্থিতির পর্যালোচনা করা হবে৷ ততদিন পর্যন্ত নেওয়া পদক্ষেপে কাজ না হলে আরও কড়া পদক্ষেপ নিতে পারেন শীর্ষ নেতারা৷ প্রয়োজনে সেই বৈঠকের তারিখ আরও এগিয়ে আনার পক্ষে সওয়াল করেছেন বিদায়ী সরকারের স্বাস্থ্যমন্ত্রী ইয়েন্স স্পান৷ বিশেষ করে দেশের পূ্র্ব ও দক্ষিণ অঞ্চলে পরিস্থিতির লাগাতার অবনতির পরিপ্রেক্ষিতে আরও দ্রুত পদক্ষেপের পক্ষে তিনি সওয়াল করেন। (সূত্র: এএফপি/ডিপিএ)
এই বিভাগের আরও খবর