লালমনিরহাট বার্তা
রংপুরের মিঠাপুকুরের তৃতীয় লিঙ্গের মারুফা সমাজের অবহেলিত সাধারণ মানুষের জন্য কাজ করব
রংপুর অফিসঃ | ১৫ ফেব, ২০২২, ২:৫৬ PM
রংপুরের মিঠাপুকুরের তৃতীয় লিঙ্গের মারুফা সমাজের অবহেলিত সাধারণ মানুষের জন্য কাজ করব
রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলায় সপ্তম ধাপে দুর্গাপুর ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে সংরক্ষিত সদস্য পদে নির্বাচিত হয়েছেন তৃতীয় লিঙ্গের মারুফা আকতার মিতু। অবহেলিত তৃতীয় লিঙ্গ জনগোষ্ঠী থেকে উঠে আসা এই নারী ইউপি সদস্য বলেছেন,সমাজের অবহেলিত সাধারণ মানুষের জন্য কাজ করব। সরকারি সব বরাদ্দ গরিব-মেহনতি মানুষের মধ্যে বিলিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন সাধারন মানুষের মাঝে। আজ মঙ্গলবার বিকেলে এই প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন। রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের ১, ২ ও ৩ নম্বর ওয়ার্ডে সংরক্ষিত ইউপি সদস্য পদে প্রতিদ্বন্ধিতা করে জয়ী হয়েছেন মারুফা আকতার মিতু। এ ওয়ার্ডে সংরক্ষিত নারী ইউপি সদস্য পদে চার জন জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্ধিতা করেন।
মিঠাপুকুর উপজেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, সংরক্ষিত সদস্য পদে তৃতীয় লিঙ্গের মারুফা আক্তার মিতু মাইক প্রতীক নিয়ে সর্বোচ্চ ৪ হাজার ৫৮০ ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্ধি রহিমা বেগম বই প্রতীকে পেয়েছেন ৩ হাজার ৬৫৩ ভোট।
নির্বাচনে বিজয় আনন্দের অনুভূতি প্রকাশ করে মারুফা বলেন, মানুষ স্বপ্ন দেখে, আমিও স্বপ্ন দেখেছিলাম। সমাজের অবহেলিত সাধারণ মানুষের মতোই কাজ করব। এটা আমার দীর্ঘদিনের আশা ছিল। অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে নিজের একটা ভালো অবস্থানের প্রয়োজন ছিল। কারণ আমি তো একটা অবহেলিত জনগোষ্ঠী থেকে উঠে এসেছি। এলাকার সাধারণ মানুষ আমাকে ভালো বাসে।আমি তাদের পাশে থাকার চেষ্টা করেছি। গ্রামের মানুষের বিপদে আপদে ছুটে গিয়েছি। স্থানীয়দের প্রত্যাশা পূরণে নির্বাচনে দাঁড়িয়েছি। কিন্তু সবাই যে আমাকে এত বেশি ভোট দিয়ে নির্বাচিত করবে এটি আমি ভাবতেও পারিনি। তিনি জানান, আমার জীবনে কোনো কিছু চাওয়া নেই। তার কোনো আত্মীয় স্বজনও নেই। এলাকার মানুষ আর তার জনগোষ্ঠীর সবাই তার আপন। দায়িত্ব পালনকালে সরকারি যা কিছু বরাদ্দ পাবেন। সবই গরিব মেহনতি মানুষের মধ্যে বিলিয়ে দেবেন। কাউকে কষ্ট দেবেন না কারো হক নষ্ট করবেন না। সরকারি সব বরাদ্দ গরিব মেহনতি মানুষের মধ্যে বিলিয়ে দেবেন এটাই আমার ওয়াদা।
মিঠাপুকুরের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলাম বলেন, তৃতীয় লিঙ্গের লোকজন মূল সমাজে ধীরে ধীরে মিশে যাচ্ছে। বিজয়ী মারুফা আকতার মিতুর এলাকায় ব্যাপক পরিচিতি। সাধারণ মানুষের কাছে তার ভালো গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে। ভোটের আগে থেকে প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে প্রত্যেক ঘরে ঘরে মারুফা তার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা তুলে ধরেছেন।এ কারণেই এলাকার মানুষ ভালোবেসে তাকে বিপুল ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছেন।
এই বিভাগের আরও খবর