সাংবিধানিক অধিকার, রাষ্ট্রীয় আইন, সামাজিক ও ধর্মীয় মূল্যবোধ সম্পর্কিত অজ্ঞতা ও অধিকার সচেতনতার অভাবে সমাজে লিঙ্গ বৈচিত্র্যময় জনগোষ্ঠী এখনও মূল স্রোতধারার বাইরে রয়েছে। এ জনগোষ্ঠী দেশের মোট জনসংখ্যার একটি ক্ষুদ্র অংশ হলেও আবহমান কাল থেকে অবহেলিত ও অনগ্রসর জনগোষ্ঠী হিসেবে পরিচিত।স্বাধীনতার ৫২ বছরেও বৈষম্য মূলক সমাজ ব্যবস্থার পরিবর্তন না ঘটায় লিঙ্গ বৈচিত্র্যময় জনগোষ্ঠী সমাজের মূল স্রোতধারায় পৌঁছতে পারেনি।
মঙ্গলবার (১৯ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রংপুর নগরীর একটি রেস্টুরেন্টের হলরুমে আয়োজিত সমতা প্রকল্প উদ্বোধন উপলক্ষে অবহিতকরণ অনুষ্ঠানে অতিথিরা এসব কথা বলেন। ইউএস এজেন্সি ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট (ইউএসএআইড)বন্ধু সোস্যাল ওয়েলফেয়ার সোসাইটিকে প্রকল্প বাস্তবায়নে সহায়তা করছে।
বন্ধু সোস্যাল ওয়েলফেয়ার সোসাইটির সিনিয়র প্রজেক্ট ম্যানেজার মশিউর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন রংপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) আব্দুল মান্নান। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন জেলা লিগ্যাল এইড কর্মকর্তা (সিনিয়র সহকারী জজ) মিনহাজুর রহমান, প্রেসক্লাব সভাপতি মোনাব্বর হোসেন মনা।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, তৃতীয় লিঙ্গের জনগোষ্ঠীর পিছিয়ে থাকার নেপথ্যে পারিবারিক, আর্থসামাজিক, শিক্ষা ব্যবস্থা, বাসস্থান ও স্বাস্থ্যগত উন্নয়ন এবং সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিত না হওয়া অন্যতম কারণ। তবে সরকার তৃতীয় লিঙ্গের এ জনগোষ্ঠীর সামাজিক ও নাগরিক অধিকার নিশ্চিতে কাজ করছে। সর্বোপরি তাদের সমাজের মূল স্রোতধারায় এনে দেশের সার্বিক উন্নয়নে তাদেরকে সম্পৃক্তকরণের লক্ষ্যে সরকার বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। সমাজের সবাই যার যার জায়গা থেকে দৃষ্টিভঙ্গি বদলিয়ে একটু সহানুভূতি থেকে এগিয়ে আসলে মূল স্রোতধারায় পৌঁছতে পারবে তৃতীয় লিঙ্গের জনগোষ্ঠী।
বন্ধুর সিনিয়র প্রজেক্ট ম্যানেজার মশিউর রহমান বলেন,আগামী পাঁচ বছরে সমতা প্রকল্প লিঙ্গ বৈচিত্র্যময় জনগোষ্ঠীর অধিকার, অগ্রগতি এবং জিডিপির জন্য তাদের জীবনযাত্রার মানোন্নয়নে কাজ করবে। পাঁচ বছরে সমতা প্রকল্পের মাধ্যমে আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ও ন্যায় বিচারে প্রবেশাধিকারের সুবিধা পাবে দেশের ৮ হাজার ৮০০ জন লিঙ্গ বৈচিত্র্যময় জনগোষ্ঠী।
অনুষ্ঠানে শিক্ষক, চিকিৎসক, আইনজীবী, সাংবাদিক, তৃতীয় লিঙ্গের জনগোষ্ঠী ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা, সরকারী-বেসরকারী প্রতিষ্ঠান এবং সংস্থার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।