রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউ সুবিধা সংবলিত কার্ডিয়াক অ্যাম্বুলেন্সটি এক বছরেও চালু হয়নি
রংপুর অফিসঃ | ২১ ফেব, ২০২২, ২:৫৩ PM
রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউ সুবিধা সংবলিত একমাত্র কার্ডিয়াক অ্যাম্বুলেন্সটি এক বছরেরও বেশি সময় গ্যারেজে পড়ে আছে। মূলত লোকবলের (চিকিৎসক) অভাব ও নীতিমালা বিষয়ে কোনো নির্দেশনা না পাওয়ায় এটি চালু হচ্ছে না বলে জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। অত্যাধুনিক এ অ্যাম্বুলেন্সটির সুবিধা বঞ্চিত হচ্ছে রংপুর অঞ্চলের মানুষ। মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ২০২১ সালের ১৯ জানুয়ারি স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীন কেন্দ্রীয় ঔষধাগার থেকে কোটি টাকার অধিক মূল্যের ইতালির তৈরি একটি আইসিইউ বেডের সুবিধা সংবলিত অত্যাধুনিক কার্ডিয়াক অ্যাম্বুলেন্সটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে দেয়া হয়। যাতে মুমূর্ষু রোগীকে অ্যাম্বুলেন্সেই সব চিকিৎসাসেবা দেয়া সম্ভব হয়। মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত প্রশাসনিক কর্মকর্তা ছাইফুল ইসলাম বলেছেন, অ্যাম্বুলেন্সটি একটি চলমান হাসপাতাল।চালক ছাড়াও এটি পরিচালনার জন্য একজন করে প্রশিক্ষিত চিকিৎসক, নার্স ও ওয়ার্ডবয় থাকতে হবে। কিন্তু লোকবলের অভাব এবং নীতিমালা না পাওয়ায় এটি চালু করা সম্ভব হচ্ছে না। মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অ্যাম্বুলেন্স শাখার ইনচার্জ মোঃ মোর্শেদ আলম বলেন, অ্যাম্বুলেন্সটি পাওয়ার পর থেকেই এটি গ্যারেজে আছে। যাতে সচল থাকে এজন্য মাঝে মাঝে ইঞ্জিন স্টার্ট করা হয়। কবে চালু হবে তা তিনি জানাতে পারেননি। মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নতুন ও পুরনো কার্ডিয়াক (সিসিইউ) ওয়ার্ডে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এখানে শয্যাসংখ্যা প্রায় ৪৮টি। সেখানে রোগী ভর্তি থাকে দ্বিগুণ। আবার খুব গরম এবং শীতে হার্টের রোগী অনেক ভর্তি হয়। রমেক হাসপাতালে এসব রোগীর প্রেসমেকার, এনজিও গ্রাম ও রিং বসানো হয় না। এজন্য অনেক সময় হার্টের গুরুতর রোগীদের উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নিয়ে যেতে হয়। হাসপাতালের নিজস্ব কার্ডিয়াক অ্যাম্বুলেন্স চালু না থাকায় বাধ্য হয়ে বিকল্প পন্থায় রোগী বহনে চিকিৎসা খরচ বাড়ছে স্বজনের। মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কার্ডিয়াক বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডাঃ মোঃ শাকিল গফুর বলেছেন, এ অঞ্চলের মানুষের আর্থসামাজিক অবস্থা খুবই খারাপ। উন্নত চিকিৎসার জন্য রোগীকে বাইরে নিয়ে যাওয়ার মতো অর্থ থাকে না স্বজনের। কার্ডিয়াক অ্যাম্বুলেন্সটি চালু হলে তারা উপকৃত হবেন। তিনি বলেন, আকস্মিক হার্টের সমস্যার কারণে কারো অবস্থা গুরুতরও হলেও দ্রæত তাকে কার্ডিয়াক অ্যাম্বুলেন্সের মাধ্যমে চিকিৎসা দেয়া সম্ভব। মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আইসিইউতে শয্যা আছে মাত্র ১০টি। মাঝে মাঝে দু”একটি শয্যা খারাপ হয়ে যায়। তাই শয্যা না পাওয়া মুমূর্ষু রোগীকে অন্যত্র নিতেও খরচ বাড়ছে স্বজনের। মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউ ইউনিটপ্রধান ডাঃ জামাল উদ্দিন মিন্টু অ্যাম্বুলেন্সটি আসার এক মাস পর যাতে এটি পরিচালনা করতে পারেন এজন্য তিনি নার্সদের প্রশিক্ষণ দিয়েছেন। মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডাঃ মোঃ রেজাউল করিম বলেছেন, কার্ডিয়াক অ্যাম্বুলেন্সটি বর্তমানে চিকিৎসকের অভাবে চালু করা সম্ভব হয়নি। এরই মধ্যে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে চারজন চিকিৎসক চেয়ে চিঠি দেয়া হয়েছে।চিকিৎসক পেলে প্রয়োজনীয় নার্স ও ওয়ার্ডবয়ের সমস্যা হবে না।