লালমনিরহাট বার্তা
নদীর উজানে বাঁধ দিয়ে একতরফা পানি প্রত্যাহার করার আগ্রাসী নীতি গ্রহণ করেছে- বজলুর রশীদ ফিরোজ
রংপুর অফিস | ২৩ এপ্রি, ২০২৪, ১১:৫১ AM
নদীর উজানে বাঁধ দিয়ে একতরফা পানি প্রত্যাহার করার আগ্রাসী নীতি গ্রহণ করেছে- বজলুর রশীদ ফিরোজ

তিস্তাসহ ৫৪টি অভিন্ন নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা ও তিস্তা সুরক্ষার দাবিতে বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল -বাসদের উদ্যোগে ২১-২৩ এপ্রিল ঢাকা থেকে তিস্তা ব্যারেজ রোডমার্চের শেষদিনে ২৩ এপ্রিল সকাল ১০টায় শাপলা চত্বরে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

রংপুর জেলা বাসদের আহবায়ক কমরেড আব্দুল কুদ্দুসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য দেন বাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সংগ্রামী সাধারণ সম্পাদক ও বামজোটের অন্যতম নেতা কমরেড বজলুর রশীদ ফিরোজ, বাসদ কেন্দ্রীয় কমিটির সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য কমরেড নিখিল দাস, কেন্দ্রীয় সদস্য জুলফিকার আলী, সিরাজগঞ্জ জেলা আহবায়ক নবকুমার কর্মকার, নওগাঁ জেলা আহবায়ক জয়নাল আবেদিন মুকুল, গাইবান্ধা জেলা সদস্য লিপি আক্তার, বগুড়া জেলার সাধারণ সম্পাদক এড. দিলরুবা নুরী, নাটোর জেলা সমন্বয়ক দেবাশীষ, রংপুর জেলা সাধারণ সম্পাদক মমিনুল ইসলাম, সদস্য অমল সরকার, ছাত্রফ্রন্টের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক রায়হানসহ স্থানীয় নেতৃবৃন্দ।

নেতৃবৃন্দ বলেন, উজানের দেশ থেকে নেমে আসা নদীগুলো জালের মতো দেশজুড়ে ছড়িয়ে দেশের ঋতুবৈচিত্র্য, প্রাণপ্রকৃতি, কৃষিকে রক্ষা করেছে। কিন্তু ভারত আন্তঃনদীসংযোগ প্রকল্প, বিদ্যুৎ উৎপাদন ও সেচ প্রকল্পের নামে একে একে ৪৯টি নদীর উজানে বাঁধ দিয়ে একতরফা পানি প্রত্যাহার করার আগ্রাসী নীতি গ্রহণ করেছে।

এতে খরাকালে তিস্তা নদীতে আর পানি মিলছে না বললেই চলে।এই ভরা বোরো মৌসুমে পানি সংকটের কারণে ধান উৎপাদন ১০ শতাংশ কমে যাবে। নদীতে পানি না থাকায় ভূ-গর্ভস্ত পানির স্তর ক্রমাগত নেমে যাচ্ছে, আর্সেনিকের মাত্রা বাড়ছে, হারিয়ে যাচ্ছে বিশাল মৎস্য সম্পদ, বিঘ্নিত হচ্ছে পরিবেশের ভারসাম্য।

তিস্তা চুক্তির বিষয়টি দুই দেশের কেন্দ্রীয় সরকারের বিষয়, এতে কোন রাজ্য সরকার বাধা দিতে পারে না।নতজানু নীতি পরিহার করে তিস্তা পানি চুক্তিতে সরকারকে জোড়ালো ভূমিকা রাখতে হবে। এতেও সমাধান না হলে আন্তর্জাতিক ফোরামে এটি অভিযোগ আকারে পেশ করে দ্রুত এই সংকট নিরসন করতে হবে।

নেতৃবৃন্দ বলেন, ভারত- পাকিস্তানের সম্পর্ক বৈরীপূর্ণ হলেও তারা সিন্ধু নদের পানি প্রত্যাহার করেনি।সরকার দাবি করে বাংলাদেশ- ভারত বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক। বন্ধুত্বের নমুনা আমরা দেখছি পানি প্রত্যাহারে, বর্ষাকালে সবগেট খুলে দিয়ে বন্যায় ভাসিয়ে দিয়ে, সীমান্তে আমাদের দেশের মানুষকে গুলি করে হত্যার মধ্যে।সাম্রাজ্যবাদী ভারত দেশে ভূ-প্রাকৃতিক, বানিজ্যিক, সাংস্কৃতিক আগ্রাসন চালিয়ে যাচ্ছে তার বিরুদ্ধে গণআন্দোলন গড়ে তুলুন।

কমরেড ফিরোজ বলেন, এই রংপুর অঞ্চলের ধান,পাট,আলুসহ অন্যান্য কৃষি ফসল দেশের অনেকাংশে চাহিদা পূরণ করে। এখন পানির অভাবে কৃষি উৎপাদন ব্যাহত আর ক্রমান্বয়ে উত্তরাঞ্চল মরুকরণের দিকে ধাবিত হচ্ছে।

বর্তমান জনস্বার্থ বিরোধী ফ্যাসিস্ট সরকারের লুটপাট, দুর্নীতি আর নতজানু পররাষ্ট্রনীতির বিরুদ্ধে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলে মরুকরণের হাত থেকে দেশকে রক্ষার জন্য জনগণের প্রতি উদাত্ত আহবান জানান।সমাবেশে শেষে একটি মিছিল নগরের প্রধান সড়ক পথে জেলা স্কুল মোড় গিয়ে রোড মার্চটি তিস্তা ব্যারেজ অভিমুখে যাত্রা করে।

এই বিভাগের আরও খবর