লালমনিরহাট বার্তা
মাদক সেবনে অনাগ্রহ ছাত্রলীগ নেতার মারধরের অভিযোগ
আজিনুর রহমান আজিম | ১ সেপ, ২০২১, ১১:০৯ AM
মাদক সেবনে অনাগ্রহ ছাত্রলীগ নেতার মারধরের অভিযোগ
লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার বুড়িমারী ইউনিয়নে মাদক সেবনে রাজি না হওয়ায় আব্দুল আল রনি (২০) নামে এক ছাত্রকে মারপিট করে আহত করার অভিযোগ উঠেছে বুড়িমারী ইউনিয়নের ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাসেল হোসেনের বিরুদ্ধে।
পাটগ্রাম থানায় দেওয়া অভিযোগে জানা গেছে, ওই ইউনিয়নের ইসলামপুর ডাঙ্গাপাড়া গ্রামের আওলাদ হোসেনের ছেলে ও ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাসেল হোসেন (২৪) গত সোমবার (৩০ আগস্ট) রাত ৯ টার দিকে একই ইউনিয়নের মঙলীবাড়ি এলাকার মমিনুর ইসলামের ছেলে আব্দুল আল রনিকে (২০) মোবাইল ফোনে ডেকে বুড়িমারী স্থলবন্দর এলাকার বাঁধেরপাড়ে নিয়ে যায়। এ সময় রাসেল সাথে আনা মদ খেতে তোড়জোর করে রনিকে। রনি মদ খেতে রাজি না হওয়ায় রাসেল এলোপাতারিভাবে মারপিট করতে থাকে। রনির চিৎকারে আশপাশের দোকানদাররা তাঁকে উদ্ধার করে। বিষয়টি জানতে পেরে রনির স্বজনেরা ঘটনাস্থলে গিয়ে রাসেলকে চর, থাপ্পর দিয়ে সরিয়ে দেয়। পরদিন মঙলবার (৩১ আগস্ট) রাত ৯ টায় পাটগ্রাম উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আল মামুন শুভ এক সালিশি বৈঠকের উদ্যোগে নেয়। চেয়ারম্যানকে নিয়ে ওইদিন ইউনিয়ন পরিষদে বসার প্রস্তুতি নেয়। সালিশি বৈঠকে রনি আসার সময় রাস্তায় ইউনিয়ন পরিষদের সামনে রাসেল ও তাঁর লোকজন রনির উপর হামলা করে। এতে উভয় পক্ষের অনন্ত ১০- ১২ জন আহত হয়। রাতেই রাসেল ও রনি তাঁদের লোকজনসহ পাটগ্রাম স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়। এ ঘটনায় ৩১ আগস্ট মঙলবার রাতে রনির বাবা মমিনুর ইসলাম ও রাসেল হোসেন বাদি হয়ে পাটগ্রাম থানায় পাল্টাপাল্টি অভিযোগ দেয়।
আব্দুল আল রনি বলেন, ‘আমাকে ডেকে জোর করে মদ খেতে বলে। আমার ওসব খাওয়ার অভ্যাস নেই। আমি রাজি না হলে রাসেল আমাকে নির্দয়ভাবে মারে।’
বুড়িমারী ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাসেল হোসেন বলেন, ‘মাদক খাবেনা এজন্য মারধর করব এটা কি সম্ভব? বানোয়াট, মনগড়া অভিযোগ করলে সেক্ষেত্রে আমি কিছু বলতে পারব না। রনির সাথে আমার আগের থেকে ভালো সম্পর্ক ছিল, আমার জুনিয়র। সোমবার (৩০ আগস্ট) রনি আমার বিষয়ে খুব বাজে ও রুঢ় ব্যবহার করছিল এজন্য দুটা থাপ্পর দিয়েছি। পরে তাঁর অভিভাবক, চাচারা প্রায় ১৫- ২০ জন আমাকে ওই খানে মারপিট করে। সালিশি বৈঠকের আগেও তাঁরা আমার উপর হামলা চালায়। এ বিষয়ে পাটগ্রাম থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছি। ’
বাঁধেরপাড় এলাকার দোকানদার লিটন হোসেন (৪০) ও মমিন আলী (৪২) বলেন, ‘রনির চিৎকার শুনে গিয়ে দেখি রাসেল মারপিট করছে। পরে আমরা তাঁকে (রনিকে) উদ্ধার করে নিয়ে আসি। ওই সময় রনি জানায় মদ খেতে রাজি না হওয়ায় রাসেল তাঁকে মারধর করেছে।’
পাটগ্রাম উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আল মামুন শুভ বলেন, ‘রাসেল হোসেন মাদক সেবন করেনা। বর্তমান উপজেলা থেকে ইউনিয়ন পর্যায়ে ছাত্রলীগের নের্তৃত্ব যারা দেয়, তাঁরা কেউ মাদকসেবী নয়। মঙলবার রাতে মারপিটের সালিশ করার জন্য বুড়িমারী ইউনিয়ন যুবলীগের নেতা, ইউনিয়ন চেয়ারম্যানসহ ইউনিয়ন পরিষদে বসেছিলাম। এর মধ্যে দুই পক্ষের মধ্যে আবারও মারামারি শুরু হয়। পরে উভয়পক্ষকে পাটগ্রাম হাসপাতালে ভর্তি হতে বলা হয়।’
বুড়িমারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু সাঈদ নেওয়াজ নিশাত বলেন, ‘মারপিটের ঘটনায় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আল মামুন শুভর উদ্যোগে সালিশি বৈঠক হওয়ার প্রস্তুতি চলছিল। বৈঠকে বসার আগে আবারও পরিষদের বাইরে উভয়পক্ষ মারপিটে জড়ায়। পরে আর বৈঠক হয়নি।’
পাটগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওমর ফারুক বলেন, ‘মারপিটের ঘটনায় দুই পক্ষই অভিযোগ দিয়েছে। তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
এই বিভাগের আরও খবর