লালমনিরহাট বার্তা
সম্পতির জেরে জীবন্ত পুঁতে রাখে ভাইকে এক বছর পর কবর থেকে লাশ উত্তোলন!
এস, কে সাহেদ, লালমনিরহাট | ২০ জুল, ২০২৩, ২:০৩ PM
সম্পতির জেরে জীবন্ত পুঁতে রাখে ভাইকে এক বছর পর কবর থেকে লাশ উত্তোলন!

সম্পত্তি নিয়ে বিরোধের জেরে ভাই ভাইকে জীবন্ত পুঁতে রাখে। এক বছর পর ভাই আলমগীর হোসেনের (৪৫) লাশ মাটির নিচ থেকে উত্তোলন করেছে পুলিশ।

বৃহস্পতিবার (২০ জুলাই) বিকালে লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার পলাশী ইউনিয়নের পশ্চিম রামদেব গ্রামে মাটির নিচ থেকে লাশ উদ্ধার করে কালীগঞ্জ থানা পুলিশ। মৃত আলমগীর কালীগঞ্জ উপজেলার কাকিনা ইউনিয়নের সিরাজুল মার্কেট এলাকার বাসিন্দা।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, আলমগীরের মায়ের জমি জবর দখল করে ভোগ করছিল তার বিমাতা ভাই খেলান উদ্দিন ও আব্দুস সাত্তার। যা নিয়ে বিমাতা ভাইদের মাঝে মলোমালিন্য চলছিল। এরই জের ধরে বিমাতা ভাই আলমগীরকে মেরে ফেলার পরিকল্পনা করে খেলান উদ্দিন ও আব্দুস সাত্তার। পরিকল্পনা মতে গত বছরের ১৩ আগস্ট সন্ধ্যায় আলমগীরকে কৌশলে ডেকে নিয়ে আদিতমারী উপজেলার পশ্চিম রামদেব গ্রামে নিয়ে আসেন বিমাতা ভাই খেলান, আব্দুস সাত্তার এবং সাত্তারের ভায়রা (শ্যালিকার স্বামী) পাবনার রাশেদুল ইসলাম ওরফে রাশেদ ড্রাইভার। এরপর পশ্চিম রামদেব গ্রামের আশরাফ আলী ও সেকেন্দার আলীর হাতে ন্যস্ত করেন তারা। সেখানে আলমগীকে কোলড্রিং এর সাথে চেতনা- নাশক ওষুধ খাইয়ে অচেতন করে। আলমগীর ঘুমিয়ে পড়লে রামদেব গ্রামে আশরাফ ও সেকেন্দার আলীর বাড়ির পিছনে একটি বাঁশ ঝাড়ের গর্তে তাকে জীবন্ত পুঁতে রাখে তারা। এ দিকে আলমগীরের কোন খোঁজ না পেয়ে তার পরিবারের লোকজন কালীগঞ্জ থানায় নিখোঁজ ডায়েরী করেন। এর দুই মাস পরে একে একে খেলান উদ্দিন ও আব্দুস সাত্তার মারা যান।

সাম্প্রতি সাত্তারের ভায়রা পাবনার রাশেদুল ড্রাইভার নিখোঁজ আলমগীরের পরিবারকে ফোন করে হত্যার ঘটনাটি প্রকাশ করেন। অবশেষে এ ঘটনায় নিহত আলমগীরের আপন ভাই সাদ্দাম হোসেন বাদি হয়ে লালমনিরহাট আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন।

মামলাটি তদন্ত করে ঘটনার সত্যতা পেয়ে তদন্ত কর্মকর্তা উপ পরিদর্শক (এসআই) নুরুজ্জামান পাবনার রাশেদুল ড্রাইভার এবং আদিতমারীর রামদেবের আশরাফ ও সেকেন্দার আলীকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তারা ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেন। আটককৃত রাশেদ ড্রাইভারের দেয়া তথ্যমতে বৃহস্পতিবার বিকালে রামদেব গ্রামের একটি বাশ ঝাড়ের গর্ত খুড়ে আলমগীর হোসেনের মরদেহ উদ্ধার করে কালীগঞ্জ থানা পুলিশ।

বৃহস্পতিবার (২০ জুলাই) বিকেলে লালমনিরহাট পুলিশ সুপার সাইফুল ইসলাম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

ঘটনাস্থলে উপস্থিত আদিতমারী থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোজাম্মেল হক বলেন, আটককৃতদের দেয়া তথ্যমতে গর্ত খুড়ে মৃত ব্যাক্তির কঙ্কাল উদ্ধার করে লালমনিরহাট সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।

এই বিভাগের আরও খবর