লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলা প্রশাসনের নামে অবৈধভাবে মাটি খুঁড়ে বালু উত্তোলনের অভিযোগ উঠেছে শ্রীরামপুর ইউনিয়নের সাবেক ইউপি সদস্য কমিজ উদ্দিনের বিরুদ্ধে। স্থানীয়দের অভিযোগ ওই ইউপি সদস্যের সাথে কতিপয় পুলিশের এবং প্রশাসনের কর্মকর্তার যোগসাজস থাকায় কাউকে হিসাব করেন না তিনি। এ নিয়ে জনমনে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। সরকার বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন ২০১০ অনুযায়ী ভ‚-গর্ভস্থ বা নদীর তলদেশ হতে বালু বা মাটি সংক্রান্ত বিশেষ আইনে ইজারা প্রদান ব্যতিত বালু, মাটি উত্তোলন, পরিবহন, বিপণন ও সরবরাহ নিষিদ্ধ করে। ইতিমধ্যে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধে জেলা ও মাঠ প্রশাসনকে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ চিঠি দিয়েছে। নিয়মিত ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনাও দেওয়া হয়েছে। রংপুর অঞ্চলের পাটগ্রাম উপজেলা ভ‚মিকম্প ও প্রাকৃতিক দূর্যোগ প্রবণ হওয়ায় বিগত দিন গুলোতে স্থানীয় প্রশাসন ড্রেজার মেশিন ব্যবহার করে বালু ও পাথর উত্তোলন বন্ধে নিয়মিত অভিযান ও ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করতেন। বেশ কিছুদিন হতে অভিযান বন্ধ রয়েছে। এ সুযোগে উপজেলার বিভিন্ন জায়গায় চলছে ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু ও পাথর উত্তোলন। স্থানীয়রা জানায়, শ্রীরামপুর ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ডের সাবেক ওই ইউপি সদস্য ড্রেজার মেশিন দিয়ে তাঁর নিজের দীঘি/পুকুর খোঁড়ার বলে কথা দিনের পর দিন ৫ নং ওয়ার্ডের আউলিয়ারহাট বাজার সংলগ্ন এলাকায় ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু উত্তোলন করছেন। এ সময় মেশিনের পাইপের মুখে এক ধরণের নেট দিয়ে ৪-৫ জন শ্রমিক পাথর সংগ্রহ করে পাশেই জমিয়ে রাখছেন। পরবর্তীতে তাঁর (কমিজ উদ্দিনের) নির্দেশিত ব্যক্তির নিকট ট্র্যাক্টরের মাধ্যমে বালু ও পাথর বিক্রির জন্য নিয়ে যায় চালকেরা। স্থানীয়ভাবে প্রভাবশালী ও দাপুটে হওয়ায় তাঁর ব্যাপারে কেউ মুখ খুলতে চান না। বেপরোয়া কমিজ উদ্দিন আইন ও বিধি-বিধানের তোয়াক্কা করেন না। এজন্য তিনি প্রশাসন ও কতিপয় সাংবাদিককে মাসোহারা দেন বলে দম্ভোক্তি করে বলেন, ‘কিসের তথ্য নেন। কতোজন আসলো গেলো। কি করার ইচ্ছে আছে করেন। আমি ইউএনও-এর নিকট অনুমতি নিয়েছি। তিনি পার্শ্ববর্তী আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর তৈরিতে ৩ শ ট্রলি বালু চেয়েছেন। তাঁর অনুমতি নিয়েই মেশিন দিয়ে শুধু বালু তুলছি। পাথর নয়। আসেন ব্যবস্থা করবো।’ স্থানীয় আমজাদ হোসেন (৫০) বলেন, ‘কম পাথর উঠে। আমরা শুনেছি বালু উত্তোলনের জন্য ইউএনও অনুমতি দিয়েছে। এজন্য কমিজ উদ্দিন মেশিন এনে বালু তুলছেন।’ এ ব্যাপারে পাটগ্রাম থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওমর ফারুক বলেন, ‘আমি এ ব্যাপারে কিছু জানি না। দেখতেছি। ’ পাটগ্রাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সাইফুর রহমান বলেন, ‘তাঁর (কমিজ উদ্দিন) কাছে কোনো প্রকার বালু চাওয়া হয়নি। এ ধরনের কোনো কথাই হয়নি। তাঁর অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধে থানার ওসিকে ব্যবস্থা নিতে বলেছি।’