রংপুর বিভাগের শিক্ষা বাতিঘর রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ১৫ বছরে এখনো শেষ হয়নি প্রক্রিয়াধীন বিশ্ববিদ্যালয়ের অবকাঠামো নির্মাণ কাজ।বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্যদের নানা অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনার কারণে প্রায় বছর সময় থেকে থমকে রয়েছে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জামাতা পরমাণুবিজ্ঞানী ড.এম.এ.ওয়াজেদের নামে অগ্রাধিকার প্রকল্প ড. ওয়াজেদ রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেনিং ইনস্টিটিউট ও প্রধানমন্ত্রীর নামে নির্মাণাধীন ১০তলা বিশিষ্ট শেখ হাসিনা হল এবং স্বাধীনতা স্মারক নির্মান কাজ।

জানা যায়, ২০১৭ সালের ৪ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী ভার্চুয়াল কনফারেন্সের মাধ্যমে ড.ওয়াজেদ রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেনিং ইনস্টিটিউট, শেখ হাসিনা হল এবং স্বাধীনতা স্মারক নির্মাণ কাজের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন।পরবর্তীতে এ প্রকল্পের নকশা ও পরামর্শক পরিবর্তন এবং নির্মান ব্যয় বাড়িয়ে নতুন করে বরাদ্দের আবেদন জানালে ওঠে দুর্নীতির অভিযোগ। তদন্তে অভিযোগের সত্যতা পেয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় নির্মাণকাজ বন্ধ হয়ে দেয়।পরবর্তীতে দীর্ঘ সময় পার হলেও কাজগুলো শুরু করতে প্রশাসনের তেমন আগ্রহ যেন নেই।গত ১২ অক্টোবর ২০২৩ বিশ্ববিদ্যালয়টির ১৫তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালিত হয়েছে।২০০৮ সালের এই দিনে বিশ্ববিদ্যালয়ের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়।২০০৯ সালের ৪ এপ্রিল সব অনিশ্চয়তা কাটিয়ে ৩০০ শিক্ষার্থী ও ১২ জন শিক্ষক নিয়ে রংপুর শহরের ধাপ লালকুঠি এলাকায় শিক্ষক প্রশিক্ষণ মহাবিদ্যালয়ে অস্থায়ী ক্যাম্পাসে একাডেমিক কার্যক্রমের উদ্বোধন হয়।২০০৮ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত শিক্ষক প্রশিক্ষণ মহাবিদ্যালয়ে চলে বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম।২০১১ সালের ৮ জানুয়ারি রংপুর শহরের লালবাগ ও মডার্ন মোড়ের মাঝামাঝি এলাকায় ৭৫ একরের নিজস্ব ক্যাম্পাসে যাত্রা শুরু করে এ প্রতিষ্ঠান।বর্তমানে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে ছয়টি অনুষদের অধীনে ২২টি বিভাগে শিক্ষাদান কার্যক্রম চলছে।

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার এক যুগ পেরিয়ে ১৬ বছরে পদার্পণ করেছে। শ্রেণি কক্ষ ও আবাসিক সংকট কাটিয়ে উঠতে পারেনি এখনো বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮৮ শতাংশ শিক্ষার্থী আবাসিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত।বিশ্ববিদ্যালয়ে নেই কোনো মিলনায়তন ও শরীরচর্চাকেন্দ্র।নিজ নামের বিশ্ববিদ্যালয়ে অবহেলিত বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেন।ক্যাম্পাসে নেই তাঁর কোনো প্রতিকৃতি।সিন্ডিকেট সভায় রোকেয়া স্টাডিজ নামে কোর্স চালুর কথা বলা হলেও বাস্তবে ঘটেনি তার কোনো প্রতিফলন।বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে এ পর্যন্ত পাঁচজন উপাচার্য এসেছেন।প্রথম উপাচার্য এক বছর পূর্ণ করতে পারেননি।দ্বিতীয় উপাচার্য হিসেবে যিনি এসেছিলেন, সীমাহীন দুর্নীতির দায়ে মেয়াদ পূর্তির আগে সরকার তাঁকে অব্যাহতি দিয়েছিল।সমালোচনার মুখে তৃতীয় উপাচার্য মেয়াদ পূর্ণ করেন।চতুর্থ উপাচার্য হিসেবে নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহ মেয়াদ পূর্ণ করেছেন।

বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ হাসিবুর রশীদ যোগদানের পর এই বিশ্ববিদ্যালয়কে ইতিবাচকভাবে এগিয়ে নিতে নিরলসভাবে কাজ করে চলেছেন।সুদক্ষ পরিচালনায় বিশ্ববিদ্যালয় সেশনজট মুক্ত হয়েছে এবং শিক্ষার্থীর বহু প্রত্যাশিত মূল ফটকের নির্মাণকাজ চলছে।বিশ্ববিদ্যালয়ের তিনটি মেগা প্রকল্পের কাজ পুনরায় শুরু করতে এবং অন্যান্য সার্বিক উন্নয়নের জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে মোট এক হাজার কোটি টাকার বাজেট পাঠানো হয়েছে।