লালমনিরহাট বার্তা
লোগোর পাশের বিজ্ঞাপন
১৯৪৭ সালে ভারত বিভাগ, পাকিস্তান সৃষ্টি ও মওলানা ভাসানী
বার্তা ডেস্কঃ | ৭ মার্চ, ২০২৩, ৭:৪২ AM
১৯৪৭ সালে ভারত বিভাগ, পাকিস্তান সৃষ্টি ও মওলানা ভাসানী

মওলানা ভাসানীর বাংলাদেশে প্রত্যাবর্তন:

১৯৩৭ সালে ভারত শাসন আইনে ভারতে দুটি বৃহৎ জাতিগোষ্ঠীর আলাদা রাষ্ট্র কাঠামোর যে পরিকল্পনা স্যার ক্রীপস মন্ত্রী মিশন প্রস্তাব কাঠামোর যে পরিকল্পনা লর্ড মাউন্ড ব্যাটন এর কাছ থেকে তা বাস্তবায়নের উদ্দেশ্যে অনেকটা বাস্তবায়িত হলো। মুসলিম লীগ নেতারা তাদের মনমত যেমন খুশী একটি উদ্ভট রাষ্ট্র কাঠামোর পরিকল্পনা করলেন। যেখানে মুসলিম অধ্যুষিত এলাকা নিয়ে পাকিস্তন নামক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হবে, বাকীটুকু ভারতীয় প্রজাতন্ত্র হবে। কিন্তু মওলানা ভাসানী চাইলেন বৃহত্তর সিলেট বাংলাদেশের সঙ্গে থাকুক। কিন্তু কংগ্রেস নেতৃবৃন্দ তা চাইলেন না। ফলে মওলানা ভাসানীর প্রতি কংগ্রেস নেতৃবৃন্দ ক্ষেপে যান। তাই তারা মওলানা ভাসানীকেঈ গ্রেফতার করে আসাম কারাগারে নিক্ষেপ করে। সিলেটে গণভোট শেষ হলে সিলেট ভারতের অংশ হিসেবে স্বীকৃতি পাবার পর ও পাকিস্তান সৃষ্টির পর সিলেট সীমান্ত দিয়ে মওলানা ভাসানীকে জেলখানা থেকে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেয়া হয়। ১৯৪৭ সালে মওলানার ভাসানী আবার প্রথমে নিজ জেলা সিরাজগঞ্জ ও পরে টাঙ্গাইলের কাগমারীতে ফিরে এলেন। যে টাঙ্গাইলের মাটি থেকে তিনি সন্তোষের জমিদার জাহ্নবী চৌধুরানীর অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে গ্রেফতারি পরোয়ানা মাথায় নিয়ে আসমরে ধুবড়ী, ঘাগমারায় বসতি স্থাপন করেন। সেখানে জঙ্গল কেটে বাড়ি-ঘর নির্মাণপূর্বক বসবাস শুরু করেন। লোকে জায়গার নতুন নামকরণ করল হামিদাবাদ।

আসামে অবস্থানকালীন ভাসানীর জনহিতকর কর্মকান্ড:

১৯২৬ সালে মওলানা ভাসানীর কৃষক প্রজাদের নিয়ে সাংগঠনিক তৎপরতা ও সামন্ত বাদ বিরোধী আন্দোলন দেখে জমিদাররা রীতিমত ভয় পেয়ে যান। কি করে ভাসানীর মুখ বন্ধ করা যায়, কি করে কৃষক সমিতি সংগঠিত করার কাজ বন্ধ করা যায়, তাই সামন্ত প্রভুদের ভাবনা। নচেৎ কৃষক লাঠিয়াল বাহিনির হাতে প্রাণটা যেতে পারে। জমিদারদের অভিযোগে বাংলার গভর্ণর মওলানা ভাসানীকে বাংলাদেশে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে ও বাংলা থেকে বহিস্কারের আদেশ দেন। পরে মওলানা ভাসানী বাংলা থেকে আসামের ঘাগমারায় জঙ্গল পরিস্কার করে বাড়ি ঘর নির্মাণ পূর্বক বসবাস করতে থাকেন। অতি অল্প দিনেই তার জনপ্রিয়তা বেড়ে যায়। লোকে ঘাগমারার নতুন নামকরণ করেন মওলানা ভাসানীর নামে হামিদাবাদ। মওলানা ভাসানী সেখানে স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, মক্তব, মসজিদ ও দাতব্যখানা প্রতিষ্ঠা করেন। অল্পকাল পরেই তিনি চলে যান ধুবড়ীর ভাসান চরে। সেখানেও গড়ে তুলেন বহু স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, মক্তব ও দাতব্য চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান। তার বহু ভক্ত অনুরক্তর সংখ্যা বেড়ে যায়। দূবদূরান্ত থেকে লোকজন তার কাছে আসে তাবিজ-কবজ ও পানি পড়ার জন্য। মওলানা ভাসানী যেহেতু একজন আধুনিক প্রগতিশীল চেতনার মানুষ, তাই তিনি পানি পড়ার পাশাপাশি লোকজনকে ঔষধ কিনে খেতে বলেন। লোক তাকে ডাকতে থাকেন ভাসানচরের মওলানা বলে। সেই থেকে তার নামের সঙ্গে মওলানা ভাসানী বিশেষণটি যুক্ত হয়ে আছে। এক বাক্যে মওলানা ভাসানী নামেই মানুষ তাকে চেনে, জানে ও তিনি বিখ্যাত হয়ে আছেন।(চলবে)

অনন্য মওলানা ভাসানী জীবন ও সংগ্রাম- লেখক আলরুহী

এই বিভাগের আরও খবর