লালমনিরহাট বার্তা
‘তিস্তার পানি বণ্টনে সহযোগিতার ক্ষেত্র এখনো রয়েছে’
বার্তা অনলাইন ডেস্কঃ | ২২ জানু, ২০২২, ২:২৪ PM
‘তিস্তার পানি বণ্টনে সহযোগিতার ক্ষেত্র এখনো রয়েছে’
একশনএইড বাংলাদেশ, ঢাকা, ২২ জানুয়ারি ২০২২, তিস্তা নদীর পানি বণ্টনের বিষয়ে সহযোগিতার ক্ষেত্র এখনও রয়েছে, এটি কেবল এক পক্ষের লাভের বিষয় হতে পারে না। একশনএইড বাংলাদেশ কর্তৃক আয়োজিত ‘তিস্তা নদী অববাহিকাঃ সংকট উত্তরণ ও সম্ভাবনা’ শীর্ষক ভার্চুয়াল ‘৭ম আন্তর্জাতিক পানি সম্মেলন ২০২২ এর শেষ দিনে বক্তব্য প্রদানকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ একথা বলেন। তিনি আরও বলেন, মানুষ ও প্রকৃতি ভিত্তিক দৃষ্টিভঙ্গি মাথায় রেখে সমাধানের পথ বের করতে হবে। ড. ইমতিয়জ আহমেদ আশা প্রকাশ করেন যে, নদীর পানি শাসনের ক্ষেত্রে প্রকৌশলগত দৃষ্টকোণ থেকে বেরিয়ে আসার সময় এসেছে।
একশনএইড বাংলাদেশ এর কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ কবির তার বক্তব্যে বলেন, মানুষ নদীর সাথে বসবাস করে, কিন্তু সাধারণত নদী সংক্রান্ত আলোচনায় তাদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়না। পটুয়াাখালীর কলাপাড়ায় পানি জাদুঘর প্রতিষ্ঠার ধারণাটি স্থানীয় সম্প্রদায়ের লোকদের অন্তর্ভুক্তির মাধ্যমে এসেছে এবং দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম সম্প্রদায়-ভিত্তিক পানি জাদুঘরটি ২০১৪ সালে একশনএইড বাংলাদেশ দ্বারা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এই পানি জাদুঘর এখন আইডিয়া জেনারেশন, নদী-ভিত্তিক তৃণমূল মানুষের কণ্ঠস্বর, শিক্ষামূলক প্ল্যাটফর্ম এবং গেøাাবাল ওয়াটার মিউজিয়ামের সাথে নেটওয়াার্কিং এর একটি কেন্দ্র হয়ে উঠেছে। দ্য গেøাাবাল নেটওয়ার্ক অফ ওটাটার মিউজিয়াম এর নির্বাহী পরিচালক ডঃ এরিবার্তো ইউলিস বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বলেন, “তিস্ত নদী অন্যান্য নদীর মতোই পরিবর্তনের প্রতীক। পানি সংক্রান্ত যেকোনো ধরনের বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য সহযোগিতা ও ভালো অনুশীলন প্রয়োজন।” “যেকোনো পানি জাদুঘর তৈরি করার সময়, আমাদের কেবল অবকাঠামোগত উন্নয়নের কথাই নয়, সাংস্কৃতিক ল্যান্ডস্কেপের কথাও মাথায় রাখা উচিত,” তিনি যোগ করেন।
বক্তব্যে বাংলাদেশের সাবেক পররাষ্ট্র সচিব ও নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়-এর প্রফেসরিয়াল ফেলো শহীদুল হক বলেন, আলোচনার ক্ষেত্রে আমরা তিস্তার পানি বণ্টন নিয়ে আরও ভালো সহযোগিতার পথ খুঁজে পেতে পারি। “আন্তর্জাতিক স্টেকহোল্ডার, জনগণ এবং রাজনৈতিক নেতাদের মধ্যে আরও মিথস্ক্রিয়া হওয়া দরকার। জলবায়ু পরিবর্তন বিবেচনা করেও ভিন্ন ন্যারেটিভে এগিয়ে যাওয়া উচিত,” তিনি যোগ করেছেন। শহীদুল হক সরকার কেন্দ্রিক কাঠামোর পরিবর্তে বৃহত্তর জনগণ কেন্দ্রিক কাঠামো কে বেছে নিয়ে নীতি নির্ধারকদের মানসিকতার পরিবর্তন ও কাঠামো পরিবর্তনের আহ্বান জানান।
অ্যাসোসিয়েশন অফ ভলান্টারি অ্যাকশন ফর সোসাইটি (আভাস)-এর নির্বাহী পরিচালক এবং একশনএইড ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ সোসাইটি এর সাধারণ পরিষদের সদস্য রহিমা সুলতানা কাজল তার বক্তব্যে তুলে ধরেন কিভাবে একশনএইড বাংলাদেশ কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত পটুয়াখালীর কালাপাড়ায় অবস্থিত পানি জাদুঘর প্রান্তিক মানুষের অধিকার রক্ষার মাধ্যম হিসেবে কাজ করছে। “নদীর প্রবাহকে বাধাগ্রস্থ করার ফলে নদী কেন্দ্রীক সভ্যতা ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। তথাকথিত উন্নয়নের করতে গিয়ে নদীর পানির সুষম বন্টন হচ্ছে না যার ফলে ব্যবহারযোগ্য পানির অভাব দেখা দিয়েছে। নদীর পানি ব্যবহার নিয়ে যে সকল আইন রয়েছে সেই আইনগুলোর যথাযথ প্রয়োগ হচ্ছে না”, বলেন রহিমা সুলতানা কাজল।
কাউনিয়া কলেজের বাংলা বিভাগের প্রধান শ্বাশ্বত ভট্টাচার্য বলেন, নদী মরে গেলে নদীকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠা জনজীবনও মরে যায়। সেই জনজীবন যদি নদী কেন্দ্রীক জীবিকা ও শ্রম থেকে বিচ্যুত হয় ও স্বাভাবিক কার্যক্রমের মধ্যে না থাকে তাহলে হাজার বছরের লালিত সংস্কৃতিও নষ্ট হয়ে যায়।
সম্মেলনের শেষ দিনে আলোচক হিসেবে আরও উপস্থিত ছিলেন নেপাল আইএসইটি এর উপদেষ্টা অজয় দীক্ষিত, লিভিং ওয়াটারস মিউজিয়াম এর প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক ও ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট ফর সায়েন্স এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চ এর অ্যাডজান্ট প্রফেসর ডাঃ সারা আহমেদ এবং এওএসইডিও এর নির্বাহী পরিচালক শামীম আরফিন।(প্রেস বিজ্ঞপ্তি)
এই বিভাগের আরও খবর