লালমনিরহাট বার্তা
তিস্তা সড়ক ও রেল সেতুর পাশ থেকে অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধ হচ্ছে না !
স্টাফ রিপোর্টারঃ | ১০ ফেব, ২০২২, ১১:২৬ AM
তিস্তা সড়ক ও রেল  সেতুর পাশ থেকে  অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধ হচ্ছে না !
স্থানীয় কতিপয় রাজনৈতিক নেতা, নির্বাচিত জন প্রতিনিধি ও বালু খেকো সেন্ডিকেট এর নিকৃষ্ট ব্যক্তিদের কারেন সদর উপজেলা তিস্তা রেলওয়ে সেতু ও সড়ক সেতু পাশে তিস্তা নদী থেকে বালু উত্তোলন বন্ধ হচ্ছে না।
তিস্তা নদী থেকে অবৈধভাবে প্রতিদিন ও রাতে শত শত ট্রাক বালু উত্তোলন করার ফলে নদী তীরবর্তী এলাকায় বিশাল গর্তের সৃষ্টি হচ্ছে। ফলে বর্ষাকালে তিস্তার তীব্র স্রোতে গতি পরিবর্তন করে তীরবর্তী এলাকায় প্রবল বেগে আঘাত হানে। প্রতি বছর তিস্তা নদীর তীরবর্তী চর গোকুন্ডা এলাকার শত শত বিঘা আবাদী জমি ঘর-বাড়ি, গাছপালা বিভিন্ন স্থাপনা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। নদী ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারগুলোর জীবন দুর্বিসহ হয়ে উঠে। বিশেষতঃ শিশু, প্রতিবন্ধী, বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের দুঃখের সীমা থাকে না। তাদের আর্তনাথ ও কান্নার রোল আকাশ-বাতাস ভারী হয়ে উঠে। এরা দরিদ্র ও অসংগঠিত, তাই এই বালু খেকো সেন্ডিকেটের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে পারে না। নদী ভাঙন মোকাবেলায় সরকার প্রতিবছর লাখ লাখ টাকা ব্যয় করে। কিন্তু সুফল পাওয়া যায় না বরং সরকারি অর্থের অপচয় লুটপাত ও ভাগাভাগি হয়।
প্রশাসনের পক্ষ থেকে অভিযান পরিচালনা করা হলেও কাংখিত ফলাফল আসে না। আবারও বালু উত্তোলন চলে। সরকার অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধে প্রশাসনকে কঠোর নির্দেশনা দিলেও অজ্ঞাত কারণে নির্দেশনা বাস্তবায়িত হচ্ছে না। তিস্তা নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে ট্রাক্টরের মাধ্যমে বালু পরিবহনের ফলে গোকুন্ডা ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের পাকাসড়ক , কাচারাস্তা ও ঘাট বিনষ্ট হচ্ছে। এমনকি নদী ভাঙন প্রতিরোধে গত বছর নদীর তীরবর্তী এলাকায় যেসকল জিও ব্যাগ স্থাপন করা হয়েছিল তার ওপর দিয়ে প্রতিদিন ও রাতে ট্রাক্টর চলাচল করছে। এতে জিও ব্যাগগুলো ফেটে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। অতি সত্বর অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধ করা না চর গোকুন্ডা গ্রাম নদীর গর্ভে বিলীন হয়ে যাবে বলে এলাকার অদিবাসী সেনাবাহিনীর সাবেক ওয়ারেন্ট অফিসার সামছুল আলমসহ অন্যান্য ব্যক্তিরা জানিয়েছেন।
এলাকাবাসী জানায় অবৈধ বালু উত্তোলনের প্রকাশ্য সেন্ডিকেট সদস্যরা হচ্ছে এলাকার সাইদুর, আখের, রিপন, খাইরুলসহ অন্যান্যরা।২০১৯ সালে ভ্রাম্যমাণ আদালত বালু খেকো সাইদুর রহমানকে তিন মাসের জেল দিয়ে ছিল। এই চক্রটি বালু উত্তোলনের নেতৃত্ব প্রদান ও প্রশাসনকে ম্যানেজ করে থাকে। এদের বিরুদ্ধে কেউ অভিযোগ করতে পারে না। এরা শারিরীক নির্যাতনসহ মিথ্যা ও হয়রানি মূলক মামলা দিবে বলে হুমকি প্রদর্শন করে। সরকারি দপ্তরে ও রাস্তায় রয়েছে এদের নিজস্ব লোক রয়েছে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে অভিযান নামার পূর্বে এরা জানতে পারে ফলে তারা সর্তক হয়ে যায় এবং বালু উত্তোলন বন্ধ রাখে।
তিস্তা ভাঙনে গত কয়েক বছরে তিন শতাধিক পরিবারের বাড়ি ভিটাসহ আবাদি জমি নদীর গর্ভে চলে গেছে বলে এলাকাবাসী জানায়। এলাকাবাসী আরও জানায়, বালু খেকো দস্যুরা এখন দিনের পরিবর্তে সন্ধ্যা থেকে সকাল ৭টা পর্যন্ত তিস্তা নদী থেকে বালু উত্তোলন করে। ট্রাক্টরের শব্দে এলাকাবাসী ঘুমাতে পারে না। পার্শ্বে তিস্তা সড়ক সেতুতে ডিউটিরত পুলিশ কোনো কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করে না। এলাকাবাসীর দাবী নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট-এর নেতৃত্বে রাতে অভিযান চালিয়ে ট্রাক্টর জব্দ, বালু উত্তোলনকারীদের গ্রেফতার এবং তাদেরকে রিমান্ডে নিয়ে সেন্ডিকেটের সাথে জড়িত রাজনৈতিক নেতা, নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা অতিব জরুরী। নতুবা এই বালু উত্তোলন বন্ধ হবে না। চর গোকুন্ডা গ্রাম ও পার্শ¦বর্তী এলাকার ঘরবাড়ি, বসতভিটা, গাছপালা ও অন্যান্য স্থাপনা নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যাবে।
এই বিভাগের আরও খবর