টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার ৫টি ইউনিয়ন পরিষদের জরাজীর্ণ ও ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে ভুতুড়ে পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ ভাঙাচোরা ভবনের ছাদ নিয়ে নিয়ে বৃষ্টির পানি পড়ে মূল্যবান কাগজপত্র ও আসবাবপত্র নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ঝুঁকি আর ভয় মাথায় নিয়ে নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে ভবনে বসে দাপ্তরিক সকল কাজকর্ম করছেন সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদের সচিব ও চেয়ারম্যান-মেম্বারগণ। ঝুঁকিপূর্ণ ভবন ভেঙে পড়ে যে কোনও সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা করেছেন তারা। সোমবার (২৬ ডিসেম্বর) সরেজমিনে ইউনিয়ন পরিষদগুলো ঘুরে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে এমন চিত্র। উপজেলা নির্বাহী নির্বাহী অফিসারের কার্যালয় সূত্র জানায়, ঝুঁকিপূর্ণ ও জরাজীর্ণ ইউনিয়ন পরিষদগুলো হচ্ছে- ২ নং জামুর্কি ইউনিয়ন পরিষদ, ৬ নং আনাইতারা ইউনিয়ন পরিষদ, ৯ নং বহুরিয়া ইউনিয়ন পরিষদ, ১০ নং গোড়াই ইউনিয়ন পরিষদ এবং ভাওড়া ইউনিয়ন পরিষদ।
২ নং জামুর্কি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ডি এ মতিন বলেন, ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক সংলগ্ন পাকুল্যা বাস স্টেশনের পূর্ব পাশে অবস্থিত ইউনিয়ন পরিষদের টিনসেট ভবনটি অত্যন্ত জরাজীর্ণ ও ঝুঁকিপূর্ণ। নানা জটিলতা এবং অর্থ সঙ্কটের কারণে এই ইউনিয়ন পরিষদের টিনসেট ভবনটি সংস্কার এবং বহুতল ভবন করার কোনো বরাদ্ধ আজ পর্যন্ত দেওয়া হয়নি। একটু বৃষ্টি হলেই পানি পড়ে মূল্যবান কাগজপত্র ও আসবাবপত্র নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। টিনসেট ভবনের সামনে একটি পুকুর রয়েছে। পুকুরের ভাঙনের ফলে টিনসেট ভবনটিও বিলীন হওয়ার পথে।
৬ নং আনাইতারা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু হেনা মোস্তফা কামাল ময়নাল হক জানান, তার ইউনিয়ন পরিষদের টিনসেট ভবনের আরও করুণ অবস্থা। যে কোনো সময় ভবনটি ভেঙে পড়ে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। একটি নতুন ভবন নির্মাণের জন্য তিনি উপজেলা প্রশাসন, উপজেলা পরিষদ, জেলা প্রশাসকসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে বহু আবেদন-নিবেদন করে আসছেন। কিন্ত আজ পর্যন্ত নতুন বরাদ্ধ হয়নি, এমনকি সংস্কার করা হয়নি। ৯ নং বহুরিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবু সাইদ মিয়া ছাদু, ১০ নং গোড়াই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবীর এবং ভাওড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমান মাসুদ অভিযোগ করেন, পরিষদের ভবন ধ্বসে পড়ে মারাত্মক দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তারা দাপ্তরিক কাজকর্ম চালিয়ে যাচ্ছেন।
উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর এনায়েত হোসেন মন্টু বলেন, মির্জাপুর উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়ন পরিষদের ভবন খুবই জরাজীর্ণ ও ঝুঁকিপূর্ণ। বিষয়টি তিনি উপজেলা পরিষদের মাসিক সমন্বয় সভায় রেজুলেশনের মাধ্যমে জেলা প্রশাসক, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন দপ্তরকে জানিয়েছেন। তারপও বরাদ্দ না আসায় নতুন ভবন নির্মাণ হচ্ছে না। বিষয়টির দ্রুত সমাধানে তিনি স্থানীয় সরকার মন্ত্রী, সবিচসহ সকলের নিকট জোর দাবি জানিয়েছেন।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. হাফিজুর রহমান জানান, জেলা প্রশাসক জরাজীর্ণ ভবনগুলো পরিদর্শন করেছেন। উপজেলার জরাজীর্ণ ও ঝুঁকিপূর্ণ ৫ ইউনিয়ন পরিষদের জন্য নতুন ভবন নির্মাণের জন্য ইতিমধ্যে বরাদ্দসহ দ্রুত ব্যবস্থা নিতে সংসদ সদস্য, জেলা প্রশাসকসহ স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়কে অবহিত করা হয়েছে।(সূত্রঃ ইত্তেফাক)