লালমনিরহাট বার্তা
রংপুর শিশু হাসপাতালের স্বাস্থ্য সেবা থেকে শিশুরা বঞ্চিত
রংপুর অফিস | ২৫ এপ্রি, ২০২৩, ১০:১০ AM
রংপুর শিশু হাসপাতালের স্বাস্থ্য সেবা থেকে শিশুরা বঞ্চিত

রংপুরের বহুল কাংখিত এবং র্দীঘ প্রত্যশিত ১‘শ শয্যার বিশেষায়িত রংপুর শিশু হাসপাতালটি শিশু স্বাস্থ্য সেবা কার্যক্রম শুরু নিয়ে এখন অনিশ্চিত অফুরন্ত প্রহর গুনছে। জনমনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে প্রশ্ন রংপুর শিশু হাসপাতালের কাংখিত স্বাস্থ্য সেবা আলোর মুখ দেখবে কবে ? ইতোমধ্যে হাসপাতালটি নির্মানের ৩৬ মাস এবং স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান মন্ত্রীর উদ্বোধনের প্রায় ৩ মাস অতিবাহিত হয়েছে।রংপুর শিশু হাসপাতালের কাংখিত স্বাস্থ্য সেবা থেকে এই অঞ্চলের শিশুরা দীর্ঘদিন ধরে বঞ্চিত রয়েছে।

হাসপাতাল চত্বরে ঘুরে দেখা গেছে, বর্ণীল সাজে সজ্জিত রংপুর শিশু হাসপাতাল ভবনে যেন নির্জন এক ভুতুরে পরিবেশ বিরাজ করছে। এখানে দায়িত্বপ্রাপ্ত একজন আবাসিক চিকিৎসক, ৪ জন নার্স এবং নিরাপত্তা প্রহরীরা কর্মহীন অলস সময় কাটাচ্ছেন। এর চত্বরে শিশুদের জন্য নির্মিতি বিভিন্ন খেলার রাইড গুলো ধুলায় মলিন হয়ে পড়ে রয়েছে।প্রায় ২ কোটি জন অধ্যুষিত রংপুর বিভাগের শিশুদের বিশেষায়িত স্বাস্থ্য সেবার লক্ষ্যে মহানগরীর প্রাণ কেন্দ্রে পুড়াতন সদর হাসপাতাল চত্বরের প্রায় ১ দশমিক ৭৮ একর জমির উপর স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়ের অর্থায়নে এবং স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের তত্বাবধানে ৩ বছর আগে রংপুর শিশু হাসপাতালটির নির্মান কাজ সম্পন্ন করা হয়।করোনার ডামাডোলে এখানে শিশুদের চিকিৎসা সেবার কার্যক্রমের উদ্যোগ বন্ধ রেখে এটিকে করোনার বিশেষায়িত হাসপাতাল হিসেবে ব্যবহার করা হয়। করোনার প্রার্দূভাব অনেক আগে মুছে গেলেও অজ্ঞাত কারনে শিশু হাসপাতালের কার্যক্রম আজও শুরু করা হয়নি। দীর্ঘ পথ পরিক্রমায় অবশেষে গত ১৬ ই ফেব্রুয়ারী ’২০২৩ স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান মন্ত্রী জাহিদ মালিক রংপুর ১‘শ শয্যার শিশু হাসতালটির ঢাক ঢোল পিটিয়ে এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন।এই অঞ্চলের মানুষ আশায় বুক বাঁধে যে এবারে শিশু হাসতালটির স্বাস্থ্য সেবার কার্যক্রম আলোর মুখ দেখবে। তবে সে আশা এখন অফুরন্ত অনিশ্চয়তার প্রহর গুনছে। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যান মন্ত্রীর উদ্বোধনের প্রায় মাস অতিবাহিত হলেও এখন পর্যন্ত এর প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতির সংযোগ কিংবা জনবল নিয়োগ করে শিশুদের স্বাস্থ্য সেবার কার্যক্রম শুরু করা হয়নি।

রংপুরের স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, নতুন নির্মিত এই শিশু হাসপাতাল ক্যাম্পাসে তিনতলা বিশিষ্ট মূল হাসপাতাল ভবনে প্রতি তলায় ২০ হাজার ৮৮২ বর্গফুট আয়তন সহ মোট ৬২ হাজার ৮৪৬ বর্গফুট আয়তনের হাসপাতালের প্রথম তলায় জরুরী বিভাগ, বর্হি বিভাগ, চিকিৎসকদের চেম্বার ও প্যাথলজিক্যাল ল্যবরেটরীর ব্যাবস্থা রয়েছে। দ্বিতীয় তলায় অপারেশন থিয়েটার ও ব্রোন ইউনিট এবং তৃতীয় তলায় শিশু ওর্য়াড এবং কেবিনের ব্যবস্থা রয়েছে। এছাড়া এখানে ৬ তলা বিশিষ্ট ডাক্তারদের আবাসিক ভবন এবং ষ্টাফ ও নার্সদের আবাসিক ভবন, তিন তলা বিশিষ্ট সুপারিনটেনডেন্ট কোয়াটার, দুই তলা বিশিষ্ট গ্যারেজ কাম ড্রাইভার কোয়াটার, কেন্দ্রীয় অক্সিজেন সাপ্লাই সিষ্টেম, বিদ্যূৎ সাব ষ্টেশন, পানি ও পয়ঃ নিস্কাশন ব্যবস্থা, অভ্যন্তরীন সড়ক তৈরী করা সহ আনুষাঙ্গিক অবকাঠামো নির্মান করা হয়েছে।

রংপুর শিশু হাসতালটি চালু হলে এখানে এ অঞ্চলের শিশুদের বিনামূল্যে জটিল অপারেশন সহ বিশেষায়িত উন্নত চিকিৎসা সেবা পাওয়া যাবে।করোনার প্রার্দূভাবের কারনে সে সময় এই হাসপাতালটিকে করোনা ডিটেকটিভ হাসপাতাল হিসেবে ব্যবহার করা হয়। করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক এবং শূন্যের কোঠায় নেমে এলেও দীর্ঘ দিনে এখনও শিশু হাসতালের প্রয়োজনীয় জনবল এবং শিশু স্বাস্থ্য সেবার যন্ত্রপাতি সংযোজন করা হয়নি। রংপুর অঞ্চলের শিশুদের জটিল রোগের চিকিৎসার জন্য ঢাকা সহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় ছুটতে হচ্ছে। রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সীমাবদ্ধ পরিসরে বর্তমানে এই অঞ্চলের শিশুদের চিকিৎসা সেবায় প্রয়োজনীয় জনবল সহ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক সংকটে নাজুক অবস্থা বিরাজ করছে।

রংপুরের সিভিল সার্জন ডাক্তার মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর কবির জানান, শিশু হাসপাতাল চালুর ব্যাপারে প্রশাসনিক অনুমোদন প্রয়োজন। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় চাহিদাপত্র স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে মন্ত্রনালয়ে পাঠানো হয়েছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয় ও অর্থ মন্ত্রনালয়ের অনুমোদন সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি এবং জনবল পাওয়া গেলেই এটি চালু করা হবে।

রংপুর বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডাক্তার এবিএম আবু হানিফ জানান, রংপুরে ১‘শ শয্যার বিশেষায়িত শিশু হাসতালটির জন্য্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রাংশ এবং জনবলের চাহিদা র্নিধারন করে এসব বরাদ্দের জন্য মন্ত্রনালয়ে প্রয়োজনীয় চাহিদাপত্র পাঠানো হয়েছে। দাপ্তরিক কাজ চলছে।

এই বিভাগের আরও খবর