রংপুরে ৩০ বছর পর অপারেশন করে ৩০ কেজি ওজনের ফাইলেরিয়ার হাত থেকে মুক্তি
রংপুর অফিসঃ | ৩ ফেব, ২০২২, ১১:১৩ AM
রংপুরের বদরগঞ্জ উপজেলার শ্যামপুরের আব্দুল লতিফ (৪০)‘র বামহাতে ৩০ কেজি ওজরেন ফাইলেরিয়া অপারেশনের মাধ্যমে অপসারন করেছে। রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. আনোয়ার হোসেনের তত্ত¡াবধানে একদল চিকিৎসক তার সফল অস্ত্রোপচার সম্পন্ন করে। ৩০ কেজি ওজন থেকে ভারমুক্ত হলো রিস্কা চালক আব্দুল লতিফের বাম হাত। জানা যায়, জন্মের দশ বছর পর বাম হাতে দেখা দেয় ফাইলেরিয়া বা গোদ রোগ। ধীরে ধীরে সেটি বাড়তে থাকে। পাঁচ বছর আগে একবার অপারেশন হলেও তা সেরে ওঠেনি। পেশায় রিকশাচালক আব্দুল লতিফ (৪০)। আবাসন প্রকল্প এলাকার হবিবুর রহমানের পুত্র। ৩০ বছরে বাড়তে থাকা হাতটির ওজন গিয়ে পৌঁছায় ৩০ কেজিতে। অসহ্য যন্ত্রণা আর দুর্ভোগ নিয়ে চলতে না পেরে আব্দুল লতিফ শরণাপন্ন হন চিকিৎসকের। অবশেষে গত ১ ফেব্রæয়ারি দুপুরে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডাঃ আনোয়ার হোসেনের তত্ত¡াবধানে একদল চিকিৎসক তার সফল অস্ত্রোপচার সম্পন্ন করে। ৩০ কেজি ওজন থেকে ভারমুক্ত হলো আব্দুল লতিফের হাত। অপারেশনের আগে আব্দুল লতিফ জানান, ছোটবেলায় তার বাম হাতে রোগটি দেখা দেয়। প্রথম দিকে কিছু বুঝতে না পেরে স্থানীয় চিকিৎসকের কাছে পরামর্শ নিয়ে ওষুধ খেতেন। এভাবে দিন যায় কিন্তু উপশম হয় না। বাড়তে থাকে হাতের ওজন ও রোগের পরিধি। অভাবের সংসারে বেছে নেন রিকশা চালানোর পেশা। একটা সময় বিয়েও করেন। গত পাঁচ বছর আগে একবার অপারেশন করালেও তা সেরে ওঠে না। বরং তা বাড়তে থাকে। রিকশা চালানো সম্ভব হয় না আর। বাড়িতে বসে বসে কাটতো দিন। তিনি রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি বিভাগে ভর্তি হন চিকিৎসার জন্য। চিকিৎসকরা তাকে পর্যবেক্ষণের পর অপারেশনের সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু ওষুধসহ আনুষঙ্গিক খরচ বহনের সার্মথ্য না থাকায় চিন্তায় ভেঙে পড়েন লতিফ। এ অবস্থায় যাবতীয় ব্যয় বহনের কথা জানান চিকিৎসক। অবশেষে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডাঃ আনোয়ার হোসেনের নেতৃত্বে তার অপারেশনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। লতিফের স্ত্রী বিলকিস বেগম বলেন, অভাব অনটনের সংসারে তিন বেলা খাবার জোটানো যেখানে সম্ভব হয়ে ওঠে না, সেখানে অপারেশন করার চিন্তা কীভাবে মাথায় আসে। পাঁচ বছর থেকে স্বামীর রিকশা চালানো বন্ধ। আয় রোজগার নেই। অন্যের বাড়িতে কাজকর্ম ও ধার-দেনা করে সংসার চলে। এ অবস্থায় চিকিৎসকের কাছে গেলে তারা বিনা খরচে অপারেশন করার কথা জানান। রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সার্জারি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডাঃ আনোয়ার হোসেন জানান, অবহেলার কারণে রোগটি বৃদ্ধি পেয়েছে। এ অবস্থায় তার বাম হাতটি কেটে ফেলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। চিকিৎসার যাবতীয় ব্যয়ভার চিকিৎসকরা বহন করেছেন। আশা করি লতিফ পুরোপুরি সুস্থ হয়ে উঠবে।