লালমনিরহাট বার্তা
মেয়েকে ইফটিজিং করার প্রতিবাদ করায় বাবাকে কুপিয়ে হত্যার মামলায় পিতা পুত্রের ফাঁসির আদেশ দিয়েছে আদালত
রংপুর অফিসঃ | ৩০ জুন, ২০২২, ১:৪৯ PM
মেয়েকে ইফটিজিং করার প্রতিবাদ করায় বাবাকে কুপিয়ে হত্যার মামলায় পিতা পুত্রের ফাঁসির আদেশ দিয়েছে আদালত
রংপুরের কাউনিয়ায় মেয়েকে ইফটিজিং করার প্রতিবাদ করায় বাবা আবুল বাশারতকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যা করার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় বাবা ও ছেলেকে ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আদালত। আজ বৃহসপতিবার বিকেলে রংপুরের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত ২ এর বিচারক তারিক হোসেন এ রায় প্রদান করেন। রায় ঘোষনার সময় দুই আসামী আদালতে উপস্থিত ছিলেন।সেই সাথে দুজনকে ১০ হাজার টাকা করে জরিমানার আদেশ দেন আদালত। অন্যদিকে দুই আসামী মাইদুল ও মাহফুজার রহমানকে বেকসুর খালাস প্রদান করা হয়।কঠোর পুলিশী পাহারায় ফাঁসির দন্ড প্রাপ্ত দুই আসামীকে আদালতের হাজত খানায় নিয়ে যাওয়া হয় ।পরেই তাদের রংপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়।
মামলার বিবরনে জানা গেছে রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার টেপামধুপুর ইউনিয়নের জিগাবাড়ি গ্রামের মা মরজিনা বেগম ও বাবা আবুল বাশারত এর মেয়েকে পার্শ্ববর্তী বিশ্বনাথপুর গ্রামের মাহবুর ইসলাম স্কুলে যাওয়া আসার পথে প্রায় সময়ই মেয়েকে ইফটিজিং করতো এবং নানা ভাবে উত্যাক্ত করতো। বিষয়টি মেয়ের বাবা নিহত আবুল বাশারত বেশ কয়েকবার বখাটে আসামী মাহবুর ইসলামের বাবা নুর আমিনকে বিচার দিলে বাবা নুর আমিন ছেলেকে শাসন না করে বরং ছেলের অপকর্মকে সমর্থন দিয়ে উল্টো তাকে নানান ভাবে হুমকি প্রদান করে আসছিলো। এ নিয়ে তাদের সাথে কয়েক দফা ঝগড়াও হয়েছে। এ ঘটনার জের ধরে ২০১৮ সালের ২৫ নভেম্বর তারিখে নিহত আবুল বাশারত আসামী মাহবুর ইসলাম ও তার বাবা নুর আমিনের বিশ্বনাথপুর গ্রামের বাড়ির সামনে দিয়ে নিজের বাসা জিগাবাড়ি ফেরার পথে আসামীরা অন্যান্য আসামীদের সহায়তায় আবুল বাশারতের উপর অতর্কিতে হামলা চালিয়ে ছোড়া দিয়ে তাকে উপর্যুপরি শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করে গুরতর আহত করে। এলাকাবাসি তাকে উদ্ধার করে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করলে সেখানে চিকিৎসাধিন অবস্থায় ওই রাতেই তিনি মারা যান। এ ঘটনায় নিহত আবুল বাশারতের স্ত্রী মর্জিনা বেগম বাদী হয়ে বখাটে আসামী মাহবুর ইসলাম তার বাবা নুর আমিন সহ ৭ জনের নাম উল্লেখ করে কাউনিয়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। পুলিশ তদন্ত শেষে ৪ আসামীর বিরুদ্ধে আদালতে চার্জসীট দাখিল করে।মামলায় ২০ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহন ও জেরা শেষে বাবা নুর আমিন ও বখাটে ছেলে মাহবুর ইসলামকে দোষি সাবস্ত করে বিজ্ঞ বিচারক ফাঁসির আদেশ দিয়ে রায় প্রদান করেন। সেই সাথে দুজনকে ১০ হাজার টাকা করে জরিমানার আদেশ দেন আদালত। অন্যদিকে দুই আসামী মাইদুল ও মাহফুজার রহমানকে বেকসুর খালাস প্রদান করা হয়।
বাদী পক্ষে মামলা পরিচালনাকারী আইনজিবী অতিরিক্ত পিপি নয়নুর রহমান টফি এ্যাডভোকেট জানান এ রায়ের মধ্য দিয়ে ন্যায় বিচার প্রতিষ্টিত হলো বলে তিনি মনে করেন। মেয়েকে ইফটিজিং করার প্রতিবাদ করায় আসামী বাবা নুর আমিন ছেলে আসামী মাহবুর ইসলামকে শাসন না করে উল্টো বাবা ছেলে ও অন্যান্য আসামীরা মিলে ভিকটিম আবুল বাশারতকে খুন করেছে। বাদীপক্ষ রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন এবং ফাঁসির রায় দ্রæত কার্যকর করার দাবি জানিয়েছেন।
আসামী পক্ষের আইনজিবী রশীদ চৌধুরী বলেন তারা ন্যায্য বিচার পাননি এ আদেশের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপীর করবেন।
এই বিভাগের আরও খবর