লালমনিরহাট বার্তা
একটা সময় আমি হতাশ হয়ে গিয়েছিলাম: পূর্ণিমা
এটিএন বাংলা | ২১ মে, ২০২৩, ১১:০৯ AM
একটা সময় আমি হতাশ হয়ে গিয়েছিলাম: পূর্ণিমা

অনিন্দ্য সুন্দরী পূর্ণিমা যেন ঢাকাই সিনেমার ইতিহাসে একটি সফল অধ্যায়ের নাম, যাকে ছাড়া চলচ্চিত্রের ইতিহাস ভাবাও যায়না। দুই যুগেরও বেশি অভিনয় ক্যারিয়ারে উপহার দিয়েছেন অসংখ্য দর্শকনন্দিত সিনেমা। শুধু অভিনয়েই নয়, দর্শকদের মুগ্ধ করেছেন রূপে এবং গুণেও। পুরো নাম দিলারা হানিফ রীতা হলেও সবার কাছে তিনি পূর্ণিমা নামেই পরিচিত ও জনপ্রিয়। দিন যতই বাড়ছে ততই যেন তার রূপে আলো ছড়াচ্ছে।

দেশের জনপ্রিয় নায়িকা দিলারা হানিফ পূর্ণিমা। ১৯৯৮ সালের ১৫ মে জাকির হোসেন রাজু পরিচালিত ‘এ জীবন তোমার আমার’ সিনেমায় অভিনয়ে মধ্য দিয়ে নায়িকা হিসাবে অভিষেক হয় তার। সেই থেকে শুরু করে ক্যারিয়ারের ২৫ বছর অর্থাৎ রজত জয়ন্তী পার করেছেন। দীর্ঘ ক্যারিয়ারে অভিনয় করেছেন ৮০টি সিনেমায়। বর্তমানে তার অভিনীত ‘গাঙচিল’, ‘জ্যাম’ ও ‘আহারে জীবন’ নামে তিনটি সিনেমা মুক্তির অপেক্ষায় রয়েছে।

অভিনয় জীবনের ২৫ বছর পূর্তি প্রসঙ্গে পূর্ণিমা বলেন, ‘শুরুতেই মহান সৃষ্টিকর্তার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। আরও কৃতজ্ঞ আমার প্রতিটি সিনেমার প্রযোজক, পরিচালক, সহশিল্পী, টেকনিশিয়ান, সাংবাদিকসহ দর্শকের প্রতি। দীর্ঘ ২৫ বছরের অভিনয় জীবনে উত্থান-পতন তো ছিলই।’

১৯৮৪ সালের ১১ জুলাই চট্টগ্রামের ফটিকছড়িতে জন্মগ্রহণ করা পূর্ণিমার শৈশব সেখানে কাটলেও কৈশোরে চলে আসেন ঢাকায়। নবম শ্রেণিতে পড়াকালীন সময়ে নাম লেখান রূপালী পর্দায়। ‘শত্রু ঘায়েল’ ছবিতে শিশুশিল্পী হিসেবে চলচ্চিত্রে যাত্রা শুরু তার। ১৭ বছর বয়সে জাকির হোসেন রাজু পরিচালিত ‘এ জীবন তোমার আমার’ সিনেমার মধ্য দিয়ে নায়িকা হিসেবে ঢালিউডে অভিষেক ঘটে; যেটি মুক্তি পায় ১৯৯৮ সালে।

প্রথম সিনেমাতেই নায়ক হিসেবে পেয়ে যান সেই সময়ের হার্টথ্রব রিয়াজকে। বাজিমাত করে বসেন প্রথম ছবি দিয়েই। ফটিকছড়ির রীতা একটু একটু করে হয়ে উঠেন আজকের পূর্ণিমা। পরিশ্রম, সাধনায় দিনে দিনে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করে তুলেছেন ঢাকাই ছবির অন্যতম একজন অভিনেত্রী হিসেবে।চলচ্চিত্রে আসার আগে ছোটবেলায় নাচগানের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশ নিতেন। চলচ্চিত্রের দাপুটে সময়টাতেও তিনি কাজ করেছেন টিভি পর্দাতেও। সেখানেও সফল এ অভিনেত্রী। নায়িকাদের মধ্যে তার সময়ে চলচ্চিত্রের পাশাপাশি নাটক, টেলিফিল্মে দাপটের সাথে তাকে দেখা গেছে। এটিএন বাংলার এক সময়ের জনপ্রিয় ধারাবাহিক ‘লাল নীল বেগুনী’-তে অভিনয় করে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পান।টিভি পর্দায় তার উল্লেখযোগ্য কাজের মধ্যে রয়েছে- ল্যাবরেটরি, নীলিমার প্রান্তে, অমানিশা, ঐখানে যেও নাকো তুমি, এখনো ভালোবাসি, দুর্ঘট, যদি ভালো না লাগে তো দিও না মন, প্রেম অথবা দুঃস্বপ্নের রাতদিন, প্রতিহরণ, ম্যানিকুইন, রংবেরং, জলে ভাসা পদ্ম, ঘরের খবর পরের খবর, শঙ্খচিল, লাভ অ্যান্ড কোং, হলুদ রঙের বায়না, ১০১ লাভ ইমার্জেন্সি।

নাটক, টেলিফিল্মের পাশাপাশি বিজ্ঞাপনেও ছড়িয়েছেন মুগ্ধতা। তার বিজ্ঞাপনের মধ্যে ছিল- গ্রামীণফোন, সিটিসেল, সানক্রেস্ট কোলা, বার্জার ঝিলিক, রাঙাপরী মেহেদি, মেরিল বেবি লোশন, কোহিনূর ডিটারজেন্ট, সুরেশ সরিষার তেল। জনপ্রিয় উপস্থাপক হানিফ সংকেত-এর ‘ইত্যাদি’ থেকে উঠে আসা শিল্পী আকবর-এর জনপ্রিয় গান ‘হাত পাখার বাতাসে’র মিউজিক ভিডিওতে অভিনয় করে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায় পূর্ণিমা। মিউজিক ভিডিওর মধ্যে এটা সেসময় সবচেয়ে জনপ্রিয় ছিল।

পূর্ণিমার চলচ্চিত্রজীবন সমৃদ্ধ। বাণিজ্যিক, সাহিত্যনির্ভর ছবিতে দেখিয়েছেন অসাধারণ প্রতিভা। সে সময়ে রিয়াজ, মান্না, ফেরদৌস, আমিন খান, শাকিল খান থেকে শুরু করে আজকের শাকিব খানের সঙ্গেও জুটি বেঁধে কাজ করেছেন এবং হয়েছেন সফলও। প্রত্যেকের সঙ্গেই গড়ে উঠেছে তার সফল জুটি তবে আমিন খান ও শাকিল খানের সঙ্গে সাফল্য পাননি খুব একটা। তবে রিয়াজ-পূর্ণিমাকে ঢালিউডের অন্যতম সেরা জনপ্রিয় জুটি বলা হয় এখন পর্যন্ত।

কাজী হায়াৎ পরিচালিত ‘ওরা আমাকে ভাল হতে দিলো না’ ছবির জন্য ২০১০ সালে পূর্ণিমা সেরা অভিনেত্রী হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেছেন। এছাড়াও পূর্ণিমা সেরা অভিনেত্রী হিসেবে মেরিল প্রথম আলো পুরস্কার পেয়েছে দুইবার- মনের মাঝে তুমি (২০০৩), হৃদয়ের কথা (২০০৬) সিনেমা দিয়ে।

ব্যক্তি জীবনে ২০০৭ সালের ৪ নভেম্বর পারিবারিকভাবে আহমেদ জামাল ফাহাদের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন পূর্ণিমা। ২০১৪ সালের ১৩ এপ্রিল তার কোলজুড়ে আসে এক কন্যাসন্তান; নাম আরশিয়া উমাইজা। সে সংসারে বনিবনা না হওয়ায় ২০১৯ সালে বিচ্ছেদ করেন এবং ২০২২ সালে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাকে বিয়ে করেন তিনি।

এই বিভাগের আরও খবর