রংপুরে আইটি খাতে তরুণদের কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে হাইটেক পার্কের নির্মাণকাজ ছয় মাস ধরে বন্ধ রয়েছে। ভারতীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এল অ্যান্ড টি কাজ বন্ধ করে চলে যাওয়ায় প্রকল্পের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। যেখানে প্রতিদিন শত শত শ্রমিকের কর্মচাঞ্চল্যে জমজমাট থাকত, সেখানে এখন বিরাজ করছে নিস্তব্ধতা। চারদিকে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে নির্মাণ সামগ্রী, অলস পড়ে আছে ক্রেন সহ ভারী যন্ত্র পাতি। পুরো এলাকায় হাতে গোনা কয়েকজন নিরাপত্তা প্রহরী ছাড়া কেউ নেই।
রংপুর সিটি কর্পোরেশনের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের খলিশাকুড়ি এলাকায় ১০ দশমিক ৭৭ একর জমিতে নির্মিত হচ্ছে এই হাইটেক পার্ক। প্রকল্পের সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয়েছিল ১৫৪ কোটি ৫৪ লাখ টাকা, যার একটি বড় অংশ ভারত সরকারের ঋণ ও বাকিটা জিওবি থেকে আসার কথা ছিল।নকশা অনুযায়ী এখানে স্টিল স্ট্রাকচারে ৭ তলা মাল্টিটেনেন্ট (এমটিবি) ভবন, দুটি ৩ তলা ক্যান্টিন ও অ্যাস্ফিথিয়েটার এবং একটি ডরমিটরি ভবন নির্মাণ করা হবে। ২০১৭ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে কাজ শেষ করার লক্ষ্য থাকলেও ২০২২ সালের ২৬ মে প্রকল্পের কাজ উদ্বোধন করা হয়। ২০২৪ সালের জুলাইয়ে কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও এখন পর্যন্ত মাত্র ২৫ শতাংশ কাজ হয়েছে। সবশেষ কাজ হয় গত বছরের ২ আগস্ট।
স্থানীয়রা জানান, গত বছরের জুলাইয়ে ছাত্র আন্দোলনের পর থেকেই প্রকল্পের কাজ ধীরগতিতে চলতে থাকে এবং ৫ আগস্টের পর একেবারে বন্ধ হয়ে যায়। এরপর থেকে নিরাপত্তা কর্মীদের ছাড়া তেমন কাউকে আর দেখা যায় না।
রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক মোঃ মাহমুদুল হক বলেন,দেশের তরুণ সমাজকে তথ্য প্রযুক্তিতে এগিয়ে নিতে এই প্রকল্পের কাজ দ্রুত শেষ করা প্রয়োজন।তা না হলে শিক্ষিত তরুণদের জ্ঞান কাজে লাগানো সম্ভব হবে না বরং বেকারত্ব বাড়বে।
রংপুরের বিজ্ঞ জনেরা বলছেন, আইটি খাতে তরুণদের কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে বন্ধ থাকা এই প্রকল্পের কাজ দ্রুত শেষ করা প্রয়োজন।তবে হাইটেক পার্কের নির্মাণ কাজ ছয় মাস ধরে বন্ধ থাকার কারনে এ প্রকল্পের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিতার মধ্যে পড়েছে বলে মন্তব্য করেছেন।
রংপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রবিউল ফয়সাল বলেন, ‘আমরা কাজ শুরু করার ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট দফতরের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছি।তারা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সাথে যোগাযোগ করছে। আশা করছি দ্রুত সমস্যার সমাধান হবে এবং প্রকল্পের কাজ পুনরায় শুরু হবে।