তারুণ্যের প্রত্যয়ে ভেদাভেদ মুছে সুশাসন ও সম্প্রীতির বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে ইয়ুথ এন্ডিং হাঙ্গার বাংলাদেশের ইয়ুথ এন্ডিং হাঙ্গার-বাংলাদেশ-এর অষ্টাদশ জাতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ (২৫ জানুয়ারি ) ঢাকার সাভারে অবস্থিত গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের মিলনায়তনে উক্ত সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
সারা দেশ থেকে আট শতাধিক স্বেচ্ছাব্রতী তরুণ-তরুণী উক্ত সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেন। প্রসঙ্গত, আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাব্রতী সংস্থা দি হাঙ্গার প্রজেক্ট-এর অনুপ্রেরণায় সৃষ্ট ইয়ুথ এন্ডিং হাঙ্গার বাংলাদেশ শিক্ষার্থী এবং তরুণ-তরুণীদের একটি সংগঠন।
অনুষ্ঠানের উদ্বোধনী পর্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ। সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান ও সুজন সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার, দি হাঙ্গার প্রজেক্ট-এর অন্তর্বর্তীকালীন কান্ট্রি ডিরেক্টর প্রশান্ত ত্রিপুরা প্রমুখ। সম্মেলনে সমবেত তরুণ-তরুণীরা বিগত সময়ে তাদের নিজ নিজ অঞ্চলে গৃহীত কার্যক্রমের অভিজ্ঞতা, শিক্ষণীয় দিক এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা উপস্থাপন করেন।
অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি শারমীন এস মুরশিদ তাঁর বক্তব্যে বলেন, ‘বিগত সময়ে নির্বাচনী ব্যবস্থা ভেঙে যাওয়ার প্রেক্ষিতে বাংলাদেশে একদলীয় ও এক ব্যক্তির শাসন ব্যবস্থা গেঁড়ে বসেছিল। কিন্তু চব্বিশে আমাদের তরুণরা এসব অন্যায়-অবিচারের বিরুদ্ধে জেগে ওঠেছে। আমাদের দায়িত্ব হবে তরুণদের ভাষা ও দাবিগুলো মনোযোগ দিয়ে শোনা ও বাস্তবায়ন করা।’
তিনি বলেন, ‘৭১-এ আমরা নতুন এক স্বাধীন বাংলাদেশ পেয়েছি। কিন্তু আমরা মুক্তিযোদ্ধাদের কাঙ্ক্ষিত বাংলাদেশ গড়ে তুলতে পারিনি। আমি চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানকেও আরেক মুুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা বলে মনে করি। তাই আমাদের দ্বিতীয় স্বাধীনতাকে ব্যর্থ হতে দেওয়া যাবে না। আমাদেরকে অন্যায়-অবিচারমুক্ত গণতান্ত্রিক দেশ অবশ্যই গড়ে তুলতে হবে।’
ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ‘তরুণদের দেখে আমি প্রতিনিয়ত অনুপ্রাণিত হই, তাদের কাছ থেকে আমি শিখি। আমরা এদেশের জন্য এক নতুন আত্মনির্ভরশীল ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তুলতে চাই। আমরা সুশাসন ও সম্প্রীতির বাংলাদেশ গড়ে তুলতে চাই। আমি মনে করি, আমাদের তরুণরাই হবে সেই বাংলাদেশ গড়ার অন্যতম কারিগর।’
প্রশান্ত ত্রিপুরা বলেন, ‘দি হাঙ্গার প্রজেক্ট মানুষের অন্তর্নিহিত ক্ষমতার বিকাশ ঘটিয়ে মানুষকে সংগঠিত ও সোচ্চার করতে চায়, মানুষকে দারিদ্র্যমুক্ত ও অধিকার সচেতন করতে চায়। হাঙ্গার প্রজেক্ট সারাদেশে একদল প্রশিক্ষিত তরুণ-তরুণী, উজ্জীবক ও নারীনেত্রী তৈরি করেছে, যাঁরা স্বেচ্ছাব্রতী মানসিকতা নিয়ে নিজেদের এবং মানুষের জীবনমানের উন্নতি ঘটাতে চায়। আমি মনে করি, আমাদের তরুণরা সকল অন্যায়-অবিচারের বিপক্ষে, সামাজিক অসমতার বিরুদ্ধে। সরকার ও রাষ্ট্রের দায়িত্ব হলো তরুণদের বিকাশের সুযোগ করে দেওয়া।’
উল্লেখ্য, অনুষ্ঠানে ড. বদিউল আলম মজুমদার-এর জীবন ও কর্ম নিয়ে দি হাঙ্গার প্রজেক্ট-এর অস্ট্রেলিয়ার সাবেক কান্ট্রি ডিরেক্টর ক্যাথি বার্ক-এর লেখা ‘টুডে আই স এ রেভুলুশন’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করা হয়।