রংপুরে বৈসম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন আবু সাঈদ হত্যা মামলায় গ্রেফতার হওয়া বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) সাবেক প্রক্টর শরিফুল ইসলামকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।সোমবার (২ ডিসেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয় রেজিস্ট্রার ড. মো. হারুন অর রশিদের স্বাক্ষরিত এক আদেশ থেকে এই তথ্য জানা যায়।
আদেশে উল্লেখ করা হয়, আপনি বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুরের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী শহীদ আবু সাঈদ হত্যা মামলায় গত ১৯ নভেম্বর ২০২৪ তারিখে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) কর্তৃক গ্রেফতার হওয়ায় সরকারি চাকরি আইন মোতাবেক আপনাকে চাকরি হতে সাময়িক বরখাস্ত করা হলো।এতে আরো উল্লেখ করা হয়, বরখাস্তকালীন আপনি বিধি মোতাবেক খোরপোষ ভাতা((ঝঁনংরংঃবহপব অষষড়ধিহপব) প্রাপ্য হবেন।এই আদেশ ১৯ নভেম্বর ২০২৪ তারিখ থেকে কার্যকর হবে।
এ ছাড়াও আবু সাঈদ হত্যাকান্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষক ও ছয় কর্মকর্তা-কর্মচারীকে গত ১৪ নভেম্বর সাময়িক বহিষ্কার করা হয়।সাময়িক বহিষ্কারকৃত দুই শিক্ষক হলেন- গণিত বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মশিউর রহমান এবং লোক প্রশাসন বিভাগের শিক্ষক ও বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান মন্ডল আসাদ।৬ কর্মকর্তা ও কর্মচারী হলেন- কেন্দ্রীয় ভান্ডারের সহকারী রেজিস্ট্রার হাফিজুর রহমান, সমাজবিজ্ঞান বিভাগের উপ-রেজিস্ট্রার মাহবুবা আক্তার, প্রক্টর অফিসের রাফিউল হাসান রাসেল, নিরাপত্তা শাখার উপ-রেজিস্ট্রার তৌহিদুল ইসলাম জনি, লোকপ্রশাসন বিভাগের কর্মচারী আমির হোসেন,ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেমস (এমআইএস) বিভাগের সেমিনার সহকারী আশিকুন্নাহার টুকটুকি।
প্রসঙ্গত,সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন যখন সারাদেশে ছড়িয়ে পড়েছিল, সেই সময় ১৬ জুলাই দুপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে পার্ক মোড়ে গুলিবিদ্ধ হন আবু সাঈদ। ২৫ বছর বয়সী আবু সাঈদ বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ১২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী ছিলেন।বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে নিরস্ত্র আবু সাঈদের গুলিবিদ্ধ হওয়ার ভিডিও ছড়িয়ে পড়লে সারাদেশে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। এই হত্যাকান্ডের প্রতিবাদে সোচ্চার হন হাজারো মানুষ। গতিশীল হয় কোটা সংস্কার আন্দোলন। ওই আন্দোলনের ধারাবাহিকতায় ছাত্র-জনতার বিক্ষোভের মুখে ৫ আগস্ট দেশ ছাড়েন শেখ হাসিনা।এর মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগের প্রায় ১৬ বছরের শাসনের অবসান ঘটে।